বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হার বৃদ্ধিতে চতুর্থ
বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

যথাযথ শিক্ষা প্রদানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুপাত খুব বেশি গুরুত্ব বহন করে থাকে। আনুপাতিক হারে শিক্ষক অপেক্ষা শিক্ষার্থী বেশি হলে সেখানে শিক্ষার্থীরা যথাযথ সুযোগ সুবিধা পায় না। আর এ অনুপাত কম হলে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় যেকোনো ধরনের সমস্যার খুব দ্রুত সমাধান দিতে পারেন।
শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে বিশ্বব্যাপী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ১:২০ অনুপাতকে যথাযথ বলে মনে করা হয়। উচ্চশিক্ষা অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এ অনুপাতকে আরও কম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং প্রতিষ্ঠান কিউএস এবং টাইম হায়ার অ্যাডুকেশন শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাতকে র্যাংকিংয়ের অন্যতম সূচক হিসেবে বিবেচনা করে। কিন্তু দেশের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হার ১:৩৪, যা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আনুপাতিক হার বৃদ্ধির দিক দিয়ে চতুর্থ।
জানা গেছে, বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বেশ জটিল। বিভিন্ন সময় শিক্ষক নিয়োগে দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অযোগ্য ব্যক্তিকে ক্ষমতাবলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার গুঞ্জনও শোনা যায়। আবার কোরাম ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের তথ্যও পাওয়া গেছে। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।
এর কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, অনেক বিভাগে শিক্ষক সংকট রয়েছে। অনেক বিভাগে দেখা যায়, ৪০০-৫০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক সংখ্যা মাত্র ২-৩ জন। আবার অনেক বিভাগের বেশিরভাগ শিক্ষক রয়েছেন শিক্ষা ছুটিতে। এতে অনেক বিভাগে সেশনজট শুরু হয়ে গেছে।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে একাধিকবার আন্দোলন করেন। কিন্তু তাদের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হারের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব রাইজিং বিডিকে বলেন, এর কারণ সোজা। আগে থেকে কেউ শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেনি। টাকা, জনবল বা শিক্ষক কেউ একদিনে দেয় না। ধীরে ধীরে বাড়াতে হয়।
শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়সকে দায়ি করে তিনি বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স অনেক পুরোনো। তাদের বাজেট আমাদের থেকে চারগুণ। সেজন্য ওদের বাজেট বেশি এবং শিক্ষকও বেশি। বশেমুরবিপ্রবির বয়স ১০ বছরের বেশি। এর আগে, কোনো উপাচার্য এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমি দায়িত্ব নেওয়া পর থেকে শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করছি। আমাদের যতজন শিক্ষক দরকার তার অর্ধেকও নাই। আমাদের এখানে শিক্ষকের ঘাটতি অনেক বেশি।
শিক্ষক নিয়োগে বাঁধা হিসেবে শিক্ষক আন্দোলনকে দায়ি করে উপাচার্য বলেন, গত বছর অক্টোবরে ২৪ জন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। তাদেরকে ডিসেম্বরে নিয়োগ দিতে পারতাম। কিন্তু শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তবে ঈদের আগে ও পরে ৫-৭ জন করে মোট ১৪ জন নিব। এতে করে আনুপাতিক হার কিছুটা কমে যেতে পারে।
/হৃদয়/মেহেদী/