জবির নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শুরুর আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর
জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
![জবির নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শুরুর আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর জবির নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শুরুর আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2024April/JNU-PM-news-2405251335.jpg)
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সুন্দরভাবে শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবাজার প্রাঙ্গণে ‘বঙ্গবাজার পাইকারী নগর বিপণী বিতান’, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মণি সরণি’, ‘নজরুল সরোবর’ ও ‘হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী শিশুপার্ক আধুনিকীকরণ’ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জগন্নাথ একটা স্কুল ছিল। প্রাইমারি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক হয়, তারপর কলেজ হয়, এখন বিশ্ববিদ্যালয়। এতটুকু জায়গা, বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো-ছিটানো হোস্টেল। সেজন্য সবকিছু এক জায়গায় করে, একটা ভালো ক্যাম্পাস এবং আধুনিক সব সুবিধাসম্পন্ন, সেখানে ছাত্রদের আবাসস্থল, ছাত্রীদের আবাসস্থল, শিক্ষকদের আবাসস্থল, শিক্ষার জন্য আধুনিক, সুন্দর, প্রযুক্তি দিয়ে একটা ক্যাম্পাস তৈরি করা।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে জায়গা দেওয়া হয়েছে, ডিজাইনও করা হয়েছে, কাজও আমরা খুব তাড়াতাড়ি শুরু করব। সেভাবে নতুন ক্যাম্পাস আমরা করে দেব। যাতে করে ছেলেমেয়েরা একটা সুস্থ পরিবেশে লেখাপড়া করতে পারে, সেদিকে নজর রেখে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভিডিওটি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিডিওটি শেয়ার করে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। আবার অনেকে দীর্ঘদিনেও কাজ আশানরূপ অগ্রগতি না হওয়া হতাশা প্রকাশ করেছেন।
প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনে তিনি জানান, ‘আমরা খুবই আশান্বিত হয়েছি প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী জবির নতুন ক্যাম্পাসের প্রকল্প সম্পর্কে খুবই ভালোভাবে অবগত। তার স্বদিচ্ছার জন্য ২০১৮ সালে কেরানিগঞ্জে জমিটি বরাদ্দ করা হয়। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক যে টেন্ডারগুলো সব প্রক্রিয়া শেষ করে পাস করে গেছেন, আমি শুধু সেগুলোর ওয়ার্ক অর্ডার করেছি। আমি দায়িত্বে আসার পর তদারকি কমিটি এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এখানে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। আমাদের অভ্যন্তরে যারা কাজ করছে, তারা নতুন ক্যাম্পাস বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার প্রতি সম্মান দেখাতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘এছাড়াও আমাদের যে পরিমাণ জনবল আছে, সেটা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান প্রকল্প চালানো অসম্ভব। কারণ আমাদের সে ধরনের দক্ষ বা বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার নেই। ডিপিপিতে উল্লেখ করা ছিলো জনবল দেওয়া হবে, ইঞ্জিনিয়ার দেওয়া হবে, মনিটরিং টিম দেওয়া হবে। কিন্তু ডিপিপি থেকে সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। ফলে আমাদের আমাদের নিজস্ব শক্তিতে এতোবড় প্রকল্পের কাজ কুলিয়ে উঠতে পারছি না। ক্ষুদ্র সামর্থ্য দিয়ে এতবড় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা অতন্ত চ্যালেঞ্জিং। সে কারণে আমি সরকারের প্রতি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিরি প্রতি আপিল করছি, তারা ডিপিপি আবার রিভাইজ করে দক্ষ জনবল, মনিটরিং টিম, অন্যান্য যে উপাদান দরকার, সেগুলো আমাদের অতিসত্ত্বর প্রদান করলে কাজটি আমরা দ্রুত অগ্রায়ণ করতে পারি।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আবাসিক হলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মাসব্যাপী আন্দোলনের মুখে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত জানায় সরকার।
অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, আবাসন ব্যবস্থা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ, চিকিৎসাকেন্দ্র, সুইমিংপুল, লেক নির্মাণসহ উন্নতমানের ক্যাম্পাস তৈরির মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তেঘরিয়ার পশ্চিমদি মৌজায় ২০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর জমির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় ভূমি মন্ত্রণালয়। ৯ অক্টোবর নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের জন্য প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। ১ হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের অক্টোবরের মধ্যে।
২০১৯ সালের জুলাইয়ে নতুন ক্যাম্পাসের নকশাও দেখানো হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ওই বছরের জুলাইয়ে প্রায় ৯০০ কোটি টাকার চেক পায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
/লিমন/মেহেদী/
আরো পড়ুন