ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

মাত্র ৪ শিক্ষক দিয়ে চলছে বশেমুরবিপ্রবির রসায়ন বিভাগ

বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩২, ২ জুন ২০২৪  
মাত্র ৪ শিক্ষক দিয়ে চলছে বশেমুরবিপ্রবির রসায়ন বিভাগ

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) রসায়নে বিভাগে চলছে তীব্র সেশনজট। বিভাগটির ১২ জন শিক্ষকের মধ্যে আটজনই শিক্ষা ছুটিতে। বিপরীতে নিয়োগ দেওয়া হয়নি একজন শিক্ষকও। মাত্র চারজন শিক্ষক দিয়ে কোনোমতে কার্যক্রম চলছে বিভাগটির। ফলে চারমাসের সেমিস্টার চলছে নয়মাসে।

সেশন জটের কবল থেকে বাঁচতে এবার উপাচার্য দপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়েছে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে একই স্থানে অবস্থান নিয়েছে এনিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২ জুন) সকাল ১০টা থেকে উপাচার্য দপ্তরে অবস্থান নেন এনিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এরপর দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী উপাচার্য দপ্তরে অবস্থান নেন।

শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, রসায়ন বিভাগের ১২ জন শিক্ষকের মধ্যে আটজনই শিক্ষা ছুটিতে। বাকি চারজন শিক্ষক দিয়ে চলছে পাঠদান এবং পরীক্ষা কার্যক্রম। বর্তমানে মাস্টার্সসহ ওই বিভাগের সাতটি ব্যাচে মোট ৩৪৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ফলে সেশনজটে নাকাল শিক্ষার্থীরা। এটা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না। স্থায়ী নিয়োগ না দেওয়ার পাশাপাশি খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে অনলাইনে পাঠদানেরও কোনো অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রসায়ন বিভাগ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, করোনার কারণে তারা সেশনজটে পড়ে গেছে। তার সঙ্গে নতুন মাত্রায় যুক্ত হয়েছে শিক্ষক সংকট। ১২ জন শিক্ষকের মধ্যে আটজনই রয়েছেন শিক্ষা ছুটিতে। মাত্র চারজন শিক্ষক দিয়ে কিভাবে এতগুলো ব্যাচ চলবে।

তিনি বলেন, রসায়ন বিভাগে ল্যাব থাকে। এ ল্যাবগুলো করার জন্য হলেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু আমরা তা পাচ্ছি না। আমাদের জন্য বাহির থেকে দুজন শিক্ষক অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উপাচার্য স্যার আমাদের সে সুযোগটিও দিচ্ছে না। দিনদিন আমরা তীব্র সেশনজটে পড়ে যাচ্ছি।

শিক্ষক সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে রসায়ন বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম বলেন, আমাদের বিভাগে শিক্ষকের সংখ্যা ১২ জন। এর মধ্যে আটজনই শিক্ষা ছুটিতে আছেন। এতোজন শিক্ষক যদি একসঙ্গে শিক্ষা ছুটিতে যান, তাহলে শিক্ষার্থীদের কি অবস্থা হবে? প্রশাসন কিভাবে একসঙ্গে এতোজনের ছুটি অনুমোদন করে! তাছাড়া তাদের বিপরীতে একজন শিক্ষকও নিয়োগ দেয়নি।

খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা খণ্ডকালীন দুজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছি। তারা অধ্যাপক, অনলাইনে ক্লাস নিবেন। কিন্তু এতোদিন উপাচার্য তাদের (খণ্ডকালীন শিক্ষক) অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দেননি। আজ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামার কারণে প্রশাসন সে অনুমতি দিয়েছে। আশা করি আমরা সেশনজট সমস্যার কিছুটা সমাধান করতে পারব।

এদিকে শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের মুখে উপাচার্য অধ্যাপক একিউএম মাহবুবের কক্ষ তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এজন্য তিনি কক্ষে আসতে পারেননি। এসব বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

এর আগে, সকালে এনিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপাচার্য দপ্তরে অবস্থান নেন। এ বিভাগটিতেও চলছে তীব্র শিক্ষক সংকট। চলতি মাসের ৪ তারিখ রিজেন্ট বোর্ডের সভা হওয়ার কথা। কিন্তু শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের কারণে রিজেন্ট বোর্ডের সভা হবে কিনা- তা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে বলে জানা গেছে।

/হৃদয়/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়