ঢাকা     রোববার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৪ ১৪৩১

বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি: উপাচার্যের কক্ষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে

বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৫, ২ জুন ২০২৪   আপডেট: ২০:২৬, ২ জুন ২০২৪
বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি: উপাচার্যের কক্ষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি আগামী বৃহস্পতিবার (৬ জুন) পর্যন্ত উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের কক্ষ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণে ব্যর্থ হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২ জুন) বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাকাডেমিকসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা আসতে পারে।

জানা যায়, করোনাকালে শিক্ষকদের বেতন বাকি ছিল। বকেয়া বেতন না পাওয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শিক্ষকদের পদোন্নতি সমস্যা। দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে আটকে আছে তাদের পদোন্নতি। এনিয়ে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেও কোনো সমাধান হয়নি। অন্যদিকে ডিউ-ডেইট সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছে শিক্ষক এবং কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে উপাচার্য ও উপ উপাচার্য উদাসীন বলে দাবি শিক্ষক নেতৃবৃন্দের।

শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা যায়, গত ২৯তম রিজেন্ট বোর্ডে শিক্ষকদের দাবিগুলো পাশ করা হয়। সেখানে ডিউ-ডেইট জটিলতাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো ছিল। এই ডিউ-ডেইটের কারণে অনেক শিক্ষকের দুই লাখ টাকার উপরে আটকে আছে। কিন্তু পাশকৃত দাবিগুলো ৩৮তম রিজেন্ট বোর্ডে সেগুলো কেড়ে নেওয়া হয়। ফলে ৩৯তম রিজেন্ট বোর্ডের আগে শিক্ষক সমিতির সদস্যরা উপাচার্য, উপউপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে দাবিগুলো পুনরায় অবগত করে। কিন্তু এতেও কোন কাজ হয়নি। ফলে গত ৩০ মে (বৃহস্পতিবার) উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের দপ্তর তালাবদ্ধ করে দেয় শিক্ষক সমিতি।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা।

কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, রোববার (২ জুন) থেকে রেজিস্ট্রারকে কোনো কাজে অংশ নিতে দেওয়া হবে না। রেজিস্ট্রার কোনো কাজে অংশগ্রহণ করলে কর্মকর্তারা সব কার্যক্রম থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখার ঘোষণা দেয়।

কর্মকর্তাদের দাবি, রেজিস্ট্রারের নিয়োগ অনিয়মতান্ত্রিক। রেজিস্ট্রার কিভাবে নিয়োগ পেলেন, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

রোববার (২জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের কক্ষ তালাবদ্ধ রয়েছে। ওই দপ্তরগুলোর কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা দপ্তরে প্রবেশ করতে পারছেন না। তবে শিক্ষক সমিতির আন্দোলন এবং কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষা চলমান ছিল। প্রশাসনিক কার্যক্রমেও কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।

এর আগে, এসব দাবি নিয়ে শিক্ষক সমিতি দুবার আল্টিমেটাম দিয়েছিল। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দীর্ঘদিন তাদের দাবি আদায়ে সোচ্চার ছিল। এতে শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ে যাবে ভেবে পুনরায় ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. বশির উদ্দীন বলেন, এতোদিন ধরে শিক্ষকদের পদোন্নতি হচ্ছে না কেন? ডিউ-ডেইট কেন হয়েছে? আমরা একাধিকবার বৈঠক করেছি। কিন্তু এতে কোনো সমাধান হয়নি। তাই আমরা নতুন করে আল্টিমেটাম দিয়েছি। চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাকে সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনি দাবিগুলো রিজেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে পাশ করিয়ে আনতে না পারলে শিক্ষক সমিতি কঠোর অবস্থানে যাবে। তবে অ্যাকাডেমিক বা প্রশাসনিক কাজে কোনো সমস্যা হবে না।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব জানান, পদোন্নতির কিছু নিয়মকানুন আছে। পূর্বের নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। এ নীতিমালা শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন করা হয়নি। ফলে পদোন্নতি আটকে গেছে। পদোন্নতি হবে, তবে সেটা ধীরে ধীরে।

/হৃদয়/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়