ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

সূত্রাপুর থানা ও জবি শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৪

জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৪, ২ জুন ২০২৪  
সূত্রাপুর থানা ও জবি শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৪

পূর্ব শত্রুতার জেরে সূত্রাপুর থানা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (২ জুন) রাতে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ন্যাশনাল হাসপাতাল এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

এদিকে এ ঘটনার সঙ্গে জবি ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন শাখাটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে প্রথম মারামারির সূত্রপাত ঘটে। এ সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের কর্মীরা রড, হাতুড়ি, ইট দিয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির কর্মী মেহেদী হাসান মিরাজসহ তার বন্ধুদের মারধর করে গুরুতর আহত করে।

এরপর তাদের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নেওয়া হলে সোহরাওয়ার্দী-সূত্রাপুর ছাত্রলীগের কয়েকজন হাসপাতালে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। এ সময় খবর পেয়ে জবি থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি গ্রুপের ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী রড, লাঠি, জিআই পাইপ নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এতে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন গুরুতর আহত হন। 

পরবর্তীতে ১৩তম ব্যাচের চয়ন, ১৫তম ব্যাচের সিফাত উল্লাহ, ১৬তম ব্যাচের রহিম, ১৭তম ব্যাচের রাজা প্রমুখের নেতৃত্বে জবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে শোডাউন দিয়ে বিপক্ষ গ্রুপকে খুঁজতে থাকেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সংঘর্ষ এলাকা থেকে একজনকে আটক করে।

এদিকে খবর পেয়ে গভীর রাতে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন।

এ বিষয়ে আহত জবি ছাত্রলীগ কর্মী ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, আমি পুরান ঢাকার স্থানীয়। গতকাল রাতে জবি ও পুরান ঢাকার ১০-১২ জন বন্ধুরা মিলে সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় আমার বন্ধু আকাশের (বাবু বাজারে ব্যবসা করে) সঙ্গে পুরোনো শত্রুতার জেরে ৭-৮ জন হাতুড়ি ও রড দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। এ সময় আমার কয়েকজন বন্ধু মার খেয়ে দৌঁড় দেয়। তারা একা পেয়ে আমাকে ও আমার বন্ধু সাব্বিরকে (জুবিলি স্কুলের শিক্ষার্থী) মেরে গুরুতর আহত করেন। এরপর আমাকে ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, জবির কেউ নেই ভেবে ওই গ্রুপের কয়েকজন হাসপাতালে আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। তবে খবর পেয়ে ফরাজী ভাইয়ের গ্রুপের আমার বড় ভাইয়েরা আসেন। তখন বিপক্ষ গ্রুপের সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন মার খেয়েছেন। তারা কেউ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের, আবার কেউ সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের। তাদের নেতা আজিম সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিল্লালের রাজনীতি করে।

আলী আজিম খাঁন সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলে জানা গেছে। তিনি পড়ালেখা করেন সোহরাওয়ার্দী কলেজে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সিয়ামকে মারতে জগন্নাথের ৩০-৪০ জন আসে। আর এরা ছিল মাত্র ৩-৪ জন। তাদের হামলায় সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন আহত হয়েছে। সিয়াম ও ফয়সাল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী। আমার সঙ্গে প্রোগ্রাম করে মাঝে মাঝে। এটা রাজনৈতিক ঘটনা না, বন্ধুদের হাতাহাতি।

সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কলেজের কেউ এ ঘটনায় জড়িত নয়। বহিরাগতরা কলেজের নাম ভাঙিয়ে ঘটনা ঘটায়। সিয়াম, ফয়সাল কলেজের কেউ নয়।

এ বিষয়ে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জবি ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জড়িত ছিল, অনেকে আহত হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে, জবি ছাত্রলীগ না।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতর কোনো মারামারি হয়নি। জেনেছি এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ছিল। কোনো অপরাধকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্রয় দেয় না। পুলিশ প্রশাসন ঘটনা তদন্ত করছে। তারা ব্যবস্থা নিবে।

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় হাতাহাতি হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। এ ঘটনার তদন্ত চলছে।

/লিমন/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়