ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের

ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ৩ জুন ২০২৪  
সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তাদের

সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালার প্রজ্ঞাপন থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সোমবার (৩ জুন) ‘বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের’ আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অফিসার্সদের সংগঠন এসব কর্মসূচি পালন করে। রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)
সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালার প্রজ্ঞাপন থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্তি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে কুবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন মানববন্ধন ও মৌন মিছিল করে।

কুবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাদেক হোসেন মজুমদারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা।

এসময় জাকির হোসেন বলেন, সরকার সার্বজনীন যে পেনশন স্কিম চালু করেছেন, তা আমরা প্রত্যাহার চাই। আমরা চাই, আগের যে পেনশন স্কিম ছিল, সেটা বহাল থাকুক। এ পেনশন স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট থাকে, সেটা ক্ষুন্ন হয়। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)
সোমবার (৩ জুন) সকাল ১১টায় এ দাবিতে ববি সংলগ্ন ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়কে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।


বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের সহসভাপতি ও ববি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাহাউদ্দিন গোলাপের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাদিম মল্লিকের সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য দেন ফাতেমা মমতাজ মলি ও মো. আতিকুর রহমান।

এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আরও বক্তব্য দেন, কল্যাণ পরিষদ গ্রেড ১১-১৬’র সভাপতি আরিফ হোসেন সুমন, সাবেক সভাপতি শাহাজাদা খান এবং কল্যাণ পরিষদ গ্রেড ১৭-২০’র সভাপতি আরিফ সিকদার।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি)
সোমবার (৩ জুন) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ দাবিতে মানববন্ধন করে হাবিপ্রবিতে কর্মরত অফিসারবৃন্দ।

মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আইন বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ রতন কুমার গুপ্ত বলেন, সরকারি চাকরিতে বেতন তুলনামূলক কম হলেও সবাই সরকারি চাকরিতে আসেন। এই আশায় যে, যখন বয়স হয়ে যাবে, তখন আমার একটি আর্থিক নিরাপত্তা থাকবে। বয়স হয়ে গেলে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে যায়। তখন একটি পরিবার চলবে এ পেনশনের টাকাতেই। এর উপর যেকোনো অন্যায় হস্তক্ষেপ আমরা কখনোই মানবো না।

হাবিপ্রবির ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের পেনশনের যে সুবিধা, তা থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে আমলারা পায়তারা করছে। আমরা তাদের এই উদ্দেশ্য সফল করতে দিবো না। এতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য স্বায়ত্বশাসিত, স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে চাইবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ভেঙ্গে যাবে।

প্রগতিশীল কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ ফেরদৌস আলম বলেন, মানুষের সুবিধা দিনদিন বাড়ে। কিন্তু বর্তমান পেনশন স্কিমের আওতায় ১৫ বছরের মাঝে কেউ এককালীন টাকা পাবে না। এতে একজন সরকারি কর্মকর্তা অবসরের সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি)
সোমবার (৩ জুন) সকাল ১০টায় যশোর প্রেসক্লাবের সামনে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেড প্রদান ও স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করে।

পরে সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনের নিচে কর্মকর্তারা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এসময় ‌‘প্রত্যয় স্কিম মানি না মানব না’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠায় নাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠায় নাই’, ‘বৈষম্যমূলক পেনশন মানি না, মানব না’, ‘এই পেনশন ব্যবস্থা দেশকে মেধাশূন্য করার চক্রান্ত’ প্রভৃতি স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে অবস্থান নেন কর্মকর্তারা।

সহকারী রেজিস্ট্রার এটিএম কামরুল হাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা বলেন, চলমান পেনশনের পরিবর্তে সর্বজনীন পেনশন একপ্রকার চক্রান্ত। দেশের গুটিকয়েক সুবিধাবাদী আমলা দ্বারা প্ররোচিত হয়ে এমন বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। এটা আমরা মানি না। প্রজ্ঞাপন থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম অন্তর্ভুক্তি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। 

এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবির জাহিদ। 

উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রজ্ঞাপনে স্বায়ত্বশাসিত, স্বশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আগামী ১ জুলাইয়ের পর যারা যোগদান করবেন, তাদের জন্য সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাধ্যতামূলক করা হয়।

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়