ঢাকা     মঙ্গলবার   ০২ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

জাবিতে ৩১৮ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা, গবেষণায় বরাদ্দ ২.৪৫ শতাংশ

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৪১, ২৯ জুন ২০২৪  
জাবিতে ৩১৮ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা, গবেষণায় বরাদ্দ ২.৪৫ শতাংশ

২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জন্য ৩১৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৭৯ কোটি ১২ লাখ টাকা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে আসবে ৩৯ কোটি ৩২ লাখ। বাজেটে মোট ঘাটতি থাকবে ৭৭ কোটি ৮৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা।

শনিবার (২৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে আয়োজিত ৪১তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বাজেট উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বরাদ্দ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত মূল বাজেটে বেতন-ভাতা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৮৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা (যা মোট বাজেটের ৬৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ)। এছাড়া পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ রাখা হয়েছে ৩১ কোটি ৯০ লাখ টাকা (মোট বাজেটের ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ)। এই দুই খাতে মোট বরাদ্দ ২২১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা যা মোট বাজেটের ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ।

তবে বাজেটে গুরুত্ব পায়নি শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতসমূহ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের মাত্র ০.১৫ শতাংশ। বাজেটে ছাত্র কল্যাণ তহবিলে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের জন্য রাখা হয়েছে ১ লাখ টাকা। বৃত্তি ও পিএইচডি প্রোগ্রাম বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ১.২০ শতাংশ। গ্রন্থাগারে বরাদ্দ ৩ কোটি ৮ লাখ ১২ হাজার টাকা, যা বরাদ্দের ০.৯৬ শতাংশ।

এছাড়া গবেষণা ও উদ্ভাবনে মাত্র বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ২.৪৫ শতাংশ। শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শ কেন্দ্র ৭৮ লাখ ৫৮ হাজার, খেলাধূলা ও পাঠ বহির্ভূত কার্যক্রম বাবদ ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য যে বরাদ্দ রয়েছে, সেটা শুধু শিক্ষকদের জন্য। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তার সিংহভাগই চলে যাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাতা বাবদ। তাই এ অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীদের চাহিদা কোনোভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়।’ বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণাবন্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন বাজেট বিশ্লেষকরা।

বাজেট অধিবেশনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, বর্তমানে রাজস্ব তহবিলে ঘাটতির পরিমাণ ৬৫ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা। চলতি অর্থবছরে আনুমানিক ১২ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে। ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী সুষম বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এরূপ আর্থিক চাপের মধ্যে বাজেট প্রণয়ন আক্ষরিক অর্থেই অসম্ভব। ঘাটতির পরিমাণ যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো কষ্টকর হয়ে যাবে।

সিনেট অধিবেশনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, রেজিস্ট্রার (চুক্তিভিত্তিক) আবু হাসান, সিনেটের শিক্ষক প্রতিনিধি ও রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিরা।

/আহসান/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়