ঢাকা     মঙ্গলবার   ০২ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৮ ১৪৩১

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সোমবার থেকে চলবে না ক্লাস-পরীক্ষা

ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৭, ৩০ জুন ২০২৪   আপডেট: ২৩:১১, ৩০ জুন ২০২৪
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সোমবার থেকে চলবে না ক্লাস-পরীক্ষা

প্রতীকী


বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ি তিন দফা দাবিতে দেশের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।

শিক্ষকদের তিন দফা দাবিগুলো হলো- বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।

রোববার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতি থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। রাইজিংবিডির সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)
কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ি নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। রোববার (৩০ জুন) অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে এ ঘোষণা দেন নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক নেতারা বলেন, ‘বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়নকে রুখতে জগদ্দল পাথরের মতো একটি চক্রান্তকারী চক্র ষড়যন্ত্র করছে। এ শিক্ষাব্যবস্থা, উন্নয়ন, কৃষি, প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে যদি রক্ষা করতে হয়- এ সমস্ত কালাকানুন থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে। এজন্য এ আন্দোলনে সবাইকে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করতে হবে।’

সোমবার থেকে নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-

১। নোবিপ্রবির সকল বিভাগের সব ধরনের ক্লাস (অনলাইন ও অফলাইন) বন্ধ থাকবে।

২। সব ধরনের পরীক্ষা বর্জন করা হবে। সিটি, টার্ম ফাইনাল, প্রেজেন্টেশন, মৌখিক, ল্যাবসহ কোনো পরীক্ষাই অনুষ্ঠিত হবে না।

৩। বিভাগীয় চেয়ারম্যানগণ বিভাগীয় অফিস, ক্লাশরুম, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব, গবেষণাগার বন্ধ রাখবেন। অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা, প্রশ্নপ্রত্র সমন্বয় সভাসহ কোনো সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৪। অনুষদের ডিনবৃন্দ ডিন অফিস, ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না। সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না।

৫। ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ ইনস্টিটিউটের অফিস, ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন। শুক্রবার ও শনিবারের ক্লাস-পরীক্ষা এবং সান্ধ্যকালীন কোর্সগুলোও বন্ধ থাকবে।

৬। ডিন অফিস, ইনস্টিটিউট, বিভাগ থেকে কোনো ধরনের সেমিনার, কনফারেন্স ও কর্মশালা আয়োজন করা থেকে বিরত থাকবেন।

৭। প্রাধ্যক্ষগণ হলের অফিস বন্ধ রাখবেন।

৮। শিক্ষকগণ সব ধরনের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন।

৯। আন্দোলন চলাকালে প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)
একই দাবিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষাণা দেওয়া হয়েছে। কুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার (১ জুলাই) থেকে আমরা দাপ্তরিক ও অ্যাকাডেমিক কোনো কার্যক্রমে অংশ নিব না। আমরা সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি ফেডারেশন যে সিদ্ধান্ত নিবে আমরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করব। এজন্য আগামীকাল থেকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস—পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণাসহ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাবি শিক্ষক সমিতি। এর আগে গত শনিবার রাতে সমিতির সম্পাদক অধ্যাপক শাহেদ রানা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এছাড়া জাবি বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রণালয় প্রণীত সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা (প্রত্যয় স্কিম) বাতিলের প্রস্তাব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন। পরে সিনেটের প্রতিনিধিদের ভোটে প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার করে আগের অবস্থা বহাল রাখার প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি, সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও দুপুর ১২টায় সমাজবিজ্ঞান ভবনের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিন ক্লাস-পরীক্ষাসমূহ কর্মসূচির আওতামুক্ত ছিল। তবে সোমবার থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে এবং ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব দাপ্তরিক কাজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, গত দুই মাস যাবৎ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দাবি আদায় না হওয়ায় আমরা অর্ধদিবস কর্মসূচি দিতে বাধ্য করেছি। প্রত্যয় স্কিম বৈষম্যমূলক। এ স্কিম সর্বজনীন হয়ে থাকলে, শুধু শিক্ষকদের কেন আলাদা করা হলো? সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলাকালে শিক্ষকরা হল, লাইব্রেরি, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস কোথাও দায়িত্ব পালন করবেন না।

অন্যদিকে, সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নও। দুই সংগঠনের নেতারা জানান, সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে ১ জুলাই দুপুর ১টা পর্যন্ত সব তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী শহিদ মিনারের সামনে অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সভা পালন করবে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
একই দাবিতে ছুটির মধ্যেই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। রোববার (৩০ জুন) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান। 
 
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্র ইদ-উল-আযহা এবং গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলছে। আগামী ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ ছুটি চলবে। এরপর শুক্রবার-শনিবার হওয়ায় আগামী ৭ জুলাই ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল।  এরই মধ্যে শিক্ষক সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করায় ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, তিন দফা দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন কর্তৃক ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি একাত্মতা পোষণ করছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে। এসময় ক্লাস-পরীক্ষা,দাপ্তরিক কাজসহ সব ধরনের কার্যক্রম থেকে শিক্ষকরা বিরত থাকবে। এছাড়া আগামী ৭ জুলাই সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবে।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)
একই দাবিতে অনলাইন ও অফলাইনে চলমান সব বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। রোববার (৩০ জুন) দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি পালিত হবে বলে বিবৃতিতে এ তথ্য জানান ববি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাতেন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তারেক মাহমুদ আবীর।

বিবৃতিতে বলা হয়, এ আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি গত ২৬ জুন ববিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা। এরপর ২৮ মে ২ ঘণ্টা, ২৫ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত অর্ধদিবস এবং আজ ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
ইবিতেও শিক্ষকরা আগামীকাল থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন। এসময় ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।

রোববার (৩০ জুন) দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে, বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবি নিয়ে নানা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেন তারা। দাবির ব্যাপারে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ি তারা এ কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ইবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, ফেডারেশনের পক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, আমরা তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আগামীকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করবো। এখানে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এছাড়া আজ আমাদের সমিতির সাধারণ সভা রয়েছে। সেখান থেকে এ বিষয়ে আমরা একটি ফর্মাল ঘোষণা দিবো। 

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ফেডারেশনের বাইরের কেউ না। ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত ই আমাদের সিদ্ধান্ত। শিক্ষকদের সেন্টিমেন্ট হলো- দাবি না মানলে আরও বড় কি কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। এদিকে এ কর্মসূচির কারণে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে।
রোববার যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবির জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক ড. মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস, পরীক্ষা বা দাপ্তরিক কার্যক্রম সবকিছুই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি আগামী ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবে। এ সময় সম্মানিত শিক্ষকগণ দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু/বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অ্যাকাডেমিক ভবনের নিচে অবস্থান করবেন।

এ কর্মসূচি পালনে শিক্ষকবৃন্দ নিম্নোক্ত নির্দেশনা মেনে চলবেন- শিক্ষকবৃন্দ কোনো ধরনের পাঠদান (অনলাইন/ অফলাইন) করবেন না, ভর্তি পরীক্ষাসহ কোনো ধরনের পরীক্ষা (অনলাইন/অফলাইন) গ্রহণ করবেন না ও এ সংক্রান্ত কার্যক্রম করবেন না, সব ল্যাব ও ক্লাসরুম বন্ধ রাখবেন, থিসিস ও প্রোজেক্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিটিং করা থেকে বিরত থাকবেন এবং বিভাগীয় সভাপতি, ডিন, প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর, ইনস্টিটিউট, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তর, সিএসআইআরএল, জেনোম সেন্টার, আইকিউএসি, শরীরচর্চা শিক্ষাদপ্তর, আইসিটি সেল, টিএসসিসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা শিক্ষকবৃন্দ তাদের অফিস ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন। এছাড়া শিক্ষকরা সমিতি কর্তৃক ঘোষিত কর্মসূচি ব্যতীত কোনোপ্রকার সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করবেন না।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)
হাবিপ্রবি শিক্ষকরাও শিক্ষক সমিতির ব্যানারে কর্মবিরতি ও অবস্থান  কর্মসূচী পালন করেছেন। পাশাপাশি আগামী সোমবার  (১ জুলাই) থেকে তারা সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।

রোববার (৩০ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কর্মবিরতি ও দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ কুদরাত-এ-খুদা অ্যাকাডেমিক ভবনের নিচে ঘণ্টাব্যাপী  অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন হাবিপ্রবি শিক্ষকরা।

এতে উপস্থিত ছিলেন হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজার রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাদেকুর রহমান, হাবিপ্রবি প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. বলরাম রায়সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

অধ্যাপক ড. সাদেকুর রহমান বলেন, জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে এই স্কিম তৈরি করা হয়েছে। যে শিক্ষকরা জাতি গঠনের কাজ করবে, তাদের অবস্থানকে যদি আপনারা তলানিতে নিয়ে যান, তবে কী প্রজন্ম আসবে আমাদের সামনে? দাবি আদায় না হলে আগামী ১ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। দাবি মানলে আমরা পুনরায় সব কার্যক্রম শুরু করব।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)
একই দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষকরা। রোববার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে সব শিক্ষকদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীরের নেতৃত্ব বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো ধরনের আশ্বাস দেওয়া হয়নি। তাই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আগামীকাল ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাব। এদিন থেকে সব বিভাগের ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। দাবি আদায় হলে আমরা ক্লাস, পরীক্ষায় ফিরব।

/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়