ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ: সেশনজটের শঙ্কা ইবি শিক্ষার্থীদের

ইবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৬, ১ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৫:৪৬, ২ জুলাই ২০২৪
ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ: সেশনজটের শঙ্কা ইবি শিক্ষার্থীদের

পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এরই অংশ হিসেবে সোমবার (১ জুলাই) থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ অচলাবস্থার কারণে সেশনজটের শঙ্কা করছেন ইবি শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের পাশাপাশি হল প্রাধ্যক্ষের অফিস, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বন্ধ থাকবে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অসংখ্য শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজিব হোসাইন বলেন, শিক্ষকদের দাবি আদায়ের জন্য চলমান আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের যে ঘোষণা দিয়েছে, এতে শিক্ষার্থীদের তীব্র দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়। এভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে থাকলে সেশন জটের আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও এ আন্দোলনের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করে শিক্ষাঙ্গনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা উচিত।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মো. মাহমুদুল হাসান নামে এক  শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবার মত কেউ নেই। সেশন জট, প্রশাসনিক কার্যক্রমে জটিলতা, হলের খাবারের মান খারাপ, সময়মত ফলাফল প্রকাশে ধীরগতি- এসব নিয়ে তারা কখনো ভাবে না।’ 

আরেক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ডিপার্টমেন্টের উন্নতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষককে দেখলাম না রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে। পরীক্ষা আটকে থাকলেও তাদের মাথা ব্যাথা নাই। কিন্তু যখনই শুনেছে নিজের স্বার্থে আঘাত লেগেছে, ভাগের টাকা কম হচ্ছে, তখনই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে রাস্তায় নামছে। এনারা আবার দেশের বড় বুদ্ধিজীবী।’

এক পোস্টে সাইফুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ চাইলে হয়তো ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে আগেই ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করতে পারতেন। এতে করে অন্তত হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের টাকা, সময়, শ্রম নষ্ট করে ১টা দিনের জন্য ক্লাসে হাজিরা দিতে যেতে হতো না।’

তিনি সেখানে প্রশ্ন রেখে আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কথা না প্রশাসন ভাবে, না কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাবে। আচ্ছা, শিক্ষার্থীদের কথা আসলে কারা ভাবে?’ 

এদিকে শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের নিচে ১ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে এ আহ্বান জানান তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা দেশের পাশে থেকেছে ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। সুতরাং জাতির স্বার্থে চলমান এই যৌক্তিক আন্দোলনেও শিক্ষার্থীদের একটু ধৈর্য ধরে সহযোগিতা করতে হবে। একটু সেক্রিফাইস তাদের করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য কি ভাবছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা আমরা ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিব। পরবর্তীতে তাদের জন্য শিক্ষকদের সেক্রিফাইস করতে হলে আমরা তা করব।

/ইদুল/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়