ঢাকা     শুক্রবার   ০৫ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২১ ১৪৩১

কোটা বাতিলের দাবি

বুধবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করবে জাবি শিক্ষার্থীরা

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:১৬, ২ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ১৬:৩০, ৩ জুলাই ২০২৪
বুধবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করবে জাবি শিক্ষার্থীরা

হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে প্রত্যাখ্যান করে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এ দাবিতে আবারও তারা বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে গণসংযোগের উদ্দেশে একটি মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা।

মিছিলটি চৌরঙ্গী হয়ে ছাত্রী হল ঘুরে প্রধান ফটক (ডেইরি গেট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে ২০ মিনিট মহাসড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে বুধবার (৩ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে টানা দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন তারা।

এদিকে জাবি শিক্ষার্থীরা ব্যস্ততম ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করায় ‍দীর্ঘ যানজট দেখা। এ সময় ইঞ্জিন বন্ধ করে সড়কের দুইপাশে হাজার হাজার যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সামিয়া সোহাগী বলেন, আপনারা দেখবেন বিগত কয়েক বছর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে অনেকেরই মুক্তিযুদ্ধের সময় বয়স ছিল দুই বছর বা তিন বছর। অনেকের আবার জন্মই হয়নি। এ রকম মানুষ কিভাবে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়? তারা আসলে স্বীকৃতি পায় সরকারের চাটুকারিতা করে। তারা এ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে এটাই প্রমাণ করতে চায় যে, আওয়ামী লীগের চাটুকাররাই ভবিষ্যতে সরকারি চাকরি পাবে। তারা আওয়ামী লীগের অরাজকতাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বারবার এ কোটা ব্যবস্থাকে সামনে আনার চেষ্টা করছে।

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি শরণ এহসান বলেন, সংবিধানে বলা আছে শুধু অনগ্রসর, আদিবাসী, কিংবা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্যই কোটা থাকবে। সংবিধানে অন্য কোনো কোটার উল্লেখ নেই। বাঙালি যুদ্ধ করেছে বৈষম্য রোধের জন্য। কিন্তু আমরা স্বাধীনতার বায়ান্ন বছর পরও বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোট সবসময় ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে।

উদ্ভিদবিজ্ঞান ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, কোটা রাখা হয় শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের জন্য। তাছাড়া আমাদের সংবিধানের ১৯তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে ‘সুযোগের সমতা’। কিন্তু এ সাম্য বিনষ্ট হচ্ছে হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহাল নিয়ে সিদ্ধান্তের কারণে। সুতরাং আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, মেধার উপর গুরুত্ব আরোপ এবং শুধু সুবিধাবঞ্চিত জনগণের কথা বিবেচনা করেই কোটা সংস্কার করা উচিত।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী  তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘আগামী বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই)  আপিল বিভাগে শুনানি আছে। সেখান থেকে যদি ছাত্র সমাজের বিরুদ্ধে রায় আসে, তাহলে এদেশে একটি গাড়িও চলতে দেওয়া হবে না। বুধবার ঢাকা—আরিচা মহাসড়ক দুই ঘণ্টার জন্য অবরোধ করব।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের  সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট৷ এর প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে'র ব্যানারে একযোগে সারা দেশে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলমান রাখার ঘোষণা দেয়।

/আহসান/মেহেদী/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়