ঢাকা     শনিবার   ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২০ ১৪৩১

কোটা বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী সমাবেশ

ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ৬ জুলাই ২০২৪  
কোটা বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী সমাবেশ

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে চার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শনিবার (৬ জুলাই) সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদী সমাবেশ করেছে। রাইজিংবিডির সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)
শনিবার (৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় পবিপ্রবির বহিস্থ ক্যাম্পাস বাবুগঞ্জের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। একই সঙ্গে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। 
সকাল সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসের প্রধান গেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু চত্বরের সামনে সমবেত হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী যায়েদ আহমদ বলেন, শুধু বিসিএস নয় সরকারি সব সেক্টরে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে এবং পোষ্য কোটার মতো অযৌক্তিক সব কোটা বাতিল করতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে নই, আমাদের অবস্থান মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে অযৌক্তিক কোটার বিরুদ্ধে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)
‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘চাকরিতে কোটা চলবে না, চলবে না চলবে না’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠো আরেকবার’ ইত্যাদি স্লোগানে দ্বিতীয় দিনের মতো বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়ক অবরোধ করেছেন।এতে তীব্র যানজট শুরু হয়, ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ জনগণ।

এর আগে, শনিবার(৬জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুস ক্যান্টিনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর শুরু হয় অবস্থান কর্মসূচি।

শুক্রবারও (৫জুলাই) তারা ব্যস্ততম গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়কটি টানা ৪ ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিল তারা।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধ আন্দোলন করছি না, আন্দোলন করছি বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে।  পৃথিবীর কোনো দেশে বাংলাদেশের মতো কোটাব্যবস্থা নেই। কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক প্রকার মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করে কি হবে, যদি আমাকে কোটার মাধ্যমে যাচাই করা হয়!

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় (রবি)
একই দাবিতে শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন-২ সংলগ্ন ব্যস্ততম ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন রবি শিক্ষার্থীরা। এসময়  তাদের নানা ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন-৩ থেকে অ্যাকাডেমিক ভবন-১ এবং শাহজাদপুর শহর প্রদক্ষিণ করে।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা পদ্ধতির ফলে দেশের বৃহত্তর অংশ চাকরি বৈষম্যে ভুগছে। এই বৈষম্য রোধে কোটা সংস্কারের দাবিতে করছি। কোটাধারী পরিবার একবার কোটার সুযোগ নিতে পারবেন। কোনো কোটাধারী একাধিকবার কোটা পাবেন না। এমন ব্যবস্থা করা হোক।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি)
শনিবার (৬ জুলাই ) বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে শাবি শিক্ষার্থীরা। মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থীরা তাদের চার দফা দাবি উল্লেখ করে বলেন, আমরা কোটা বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করছি। যতক্ষণ না ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল করা হয় এবং কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়, ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে।

চার দফা দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে; অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য যৌক্তিক মাত্রায় কোটা রাখতে হবে,  সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দূর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়