ঢাকা     রোববার   ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২১ ১৪৩১

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অচল, চলবে সূর্যাস্ত পর্যন্ত

জাবি ও গবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ৮ জুলাই ২০২৪  
ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অচল, চলবে সূর্যাস্ত পর্যন্ত

বাংলা ব্লকেড আন্দোলন কর্মসূচির আওতায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ও কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ অবরোধ চলবে বলে জানা গেছে।

সোমবার (৮ জুলাই) বিকাল ৩ টায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সমবেত হতে শুরু করেন জাবি শিক্ষার্থীরা। পরে এক দফা দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচী শুরু করেন তারা।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও সমর্থনে বৃহৎ কোটা আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারা দেশের মহাসড়কগুলো একযোগে অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কোটা আন্দোলনের অংশ হিসেবে টানা পঞ্চম দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে গান-কবিতায় কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে এ কর্মসূচি পালন করছেন জাবি শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা জানান, নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেব সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবে। চার দফা দাবিতে টানা আন্দোলনের পর 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাকরিতে সব গ্রেডে সব ধরনের ‘কোটা বাতিল’ করে আইন পাশের এক দফা দাবিতে মাঠে নেমেছেন তারা।

বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা আমাদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ভালো সাড়া দিয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।

এ অবরোধে ফলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। যাত্রীদের অনেককে যানবাহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে দেখা যায়। 

সাভারের কাঠগড়া এলাকায় ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস মসজিদের ইমাম মুনির মাহমুদ বলেন, সাভারে একটা কাজে এসেছিলাম। ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের অবরোধের মধ্যে পড়লাম। পত্র-পত্রিকায় জানতে পেরেছি কোটাব্যবস্থার প্রতিবাদে ছাত্ররা মাঠে নেমেছে। মন থেকে এ আন্দোলনের প্রতি আমার সমর্থন রয়েছে। চলাচলের কষ্ট হলেও আমি তা মেনে নিয়েছি। ছাত্রদের দাবি আদায় হোক।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, আমাদের এ আন্দোলনে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা সমর্থন জানিয়েছেন। বৈষম্যমূলক এ  কোটা প্রথার অবসান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে৷ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না। আজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আমাদের এ অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এদিকে একই দাবিতে দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনের সি-ব্লক থেকে একত্রিত হয়ে মিছিল শুরু করে গবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি একাডেমিক ভবন হয়ে মূল ফটক থেকে বাইশ মাইল পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। প্রায় আধঘণ্টা অবরোধ করে রাখার পর তারা সড়ক ত্যাগ করেন।

শিক্ষার্থীরা এ সময় কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আমার সোনার বাঙলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনে অংশ নেয়া রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম জানান, কোটার যৌক্তিক সংস্কার প্রয়োজন। স্বাধীন রাষ্ট্রে কখনোই সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৫৬% কোটা থাকা অযৌক্তিক, সাধারণের জন্য অতি উদ্বেগের বিষয়। তাদের দাবি না মেনে নেওয়া হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান তিনি। একই সঙ্গে অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে যোগদানের আহ্বান করেন তিনি।

/আহসান/সানজিদা/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়