বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ২ সড়ক অবরুদ্ধ, দূর্ভোগ চরমে
বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘কোটা প্রথার আস্তানা, ভেঙ্গে যাক গুড়িয়ে যাক’সহ নানা স্লোগানে মুখরিত ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক। সব গ্রেডে বৈষম্যমূলক কোটা সংস্কারের দাবিতে তৃতীয় দিনের মত সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টায় আন্দোলনের শুরুতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ এবং বিকেল ৫টায় গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একসঙ্গে দুই সড়ক অবরোধ করায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে যাত্রীসহ চালকদের দীর্ঘ সময় তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে দেখা গেছে। তবে অ্যাম্বুলেন্সগুলো ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। আন্দোলনে অংশ নিতে এর আগে বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের মাইকিং করে ডাকা হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আপিল বিভাগের রায় শুধু চার সপ্তাহের জন্য হলে চলবে না। আমরা অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা চাই। এর বেশি আর কোনো কোটা থাকতে পারবে না।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ হোসেন রাজ বলেন, সংবিধান যেখানে সমতার কথা বলেছে, সেখানে কেনো কোটা পদ্ধতি থাকবে? আমরা সমতায় বিশ্বাসী। আমরা মেধার পরিচয় দিয়ে চাকরি পেতে চাই। কোটা দিয়ে কেনো চাকরি পেতে হবে!
তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধ আন্দোলন করছি না, আন্দোলন করছি বৈষম্যমূলক কোটার বিরুদ্ধে। পৃথিবীর কোনো দেশে বাংলাদেশের মতো কোটা ব্যবস্থা নেই। কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক প্রকার মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করে কি হবে, যদি আমাকে কোটার মাধ্যমে যাচাই করা হয়? আমরা এই ব্যবস্থার সংস্কার চাই।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর শরীফ সরকার বলেন, আমাদের দাবি এক দফা। আমরা সমতা চাই, বৈষম্য চাই না। এমনকি আমরা সাধারণ জনগণকেও ভোগান্তিতে ফেলতে চাই না। আমরা কোটা সংস্কার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, মেধার বিপরীতে যদি কোটা দিয়ে চাকরি পেতে হয়, তাহলে আমরা কেনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি? আমাদের নানা কিংবা নানীরা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, এটা কি আমাদের অপরাধ? যতদিন পর্যন্ত কোটার সংস্কার না হবে, ততদিন সড়ক অবরোধ থাকবে।
পরে ২ ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ শেষে বিকেল সাড়ে ৬টায় উভয় সড়ক ছেড়ে দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
/হৃদয়/মেহেদী/