কোটা সংস্কার দাবি
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মশাল মিছিল
ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার কোটা সংস্কারের ১ দফা দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাধা প্রদানসহ হামলা ও মামলার করে পুলিশ। এর প্রতিবাদে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্বিবিদ্যালেয়ে মশাল মিছিল করা হয়েছে। রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মশাল মিছিল বের করেন জাবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারের সামনে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
এসময় তাদের কোটা বিরোধী ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ বলেন, শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে সকল ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিলের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছে। ২০১৮ সালে যখন শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে কোটা সংস্কার চেয়েছে তখন প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিল করে এর সমাধান দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা যৌক্তিক ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছি, কিন্তু পুলিশ সেখানে হামলা করেছে। আমরা হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার দাবি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)
পুলিশের বাঁধা ও হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (১২জুলাই) বিকেল ৫টায় বিক্ষোভ মিছিল করে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুস ক্যান্টিন থেকে শুরু করে ছেলের আবাসিক হল, লেকপাড়, মেয়েদের আবাসিক হল প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীকে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে।
পরে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মশাল মিছিল বের করে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীরা। মশাল মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লিপুস ক্যান্টিনের সামনে থেকে শুরু হয়। এরপর নিউ মার্কেট এলাকা ও প্রধান ফটক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গান্ডু চত্ত্বরে এসে শেষ হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী মশাল হাতে নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহন করেন।
জানা যায়, গতকাল ১১জুলাই সারাদেশে কোটা বিরোধী আন্দোলনে 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থী ও চাকরী প্রার্থীরা। এসময় আন্দোলনে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল এবং কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে। এতে আহত হন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের(কুবি) কয়েকজন শিক্ষার্থী। এছাড়া অনেক গণমাধ্যমকর্মীও পুলিশের হামলায় আহত হন বলে জানা যায়।
পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রামিম বলেন, কুমিল্লায় আক্রমণ করে দমিয়ে দেবেন? চট্টগ্রাম আক্রমণ করে দেবেন? রংপুর আক্রমণ করে দমিয়ে দেবেন? ভুলে যাবেন না, বাংলাদেশের ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সোচ্চার। ভুলেও এ দুঃসাহস দেখাবেন না ছাত্রদের উপরে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি)
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে মশাল মিছিল নিয়ে প্রধান ফটক প্রদক্ষিণ করে আবার সেখানে ফিরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয় শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা গত কয়েকদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছি। কিন্তু বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাঁধা দিয়ে লাঠিচার্জ করে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তারা আরও বলেন, ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে আপনারা ষড়যন্ত্র খুঁজবেন না। এটি কোনো দল বা মতের স্বতন্ত্র দাবি নয়, এটি জনতার দাবি।
/মেহেদী/