ঢাকা     মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫ ||  বৈশাখ ৯ ১৪৩২

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবিতে সংহতি সমাবেশ

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৭, ১৪ জুলাই ২০২৪  
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবিতে সংহতি সমাবেশ

কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা প্রদানসহ হামলা ও মামলা দায়েরের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সংহতি সমাবেশ করা হয়েছে। সমাবেশ থেকে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করা হয়। 

এদিকে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, হামলা ও মামলা দায়েরের প্রতিবাদে আয়োজিত এ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে জাবির বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক সংহতি প্রকাশ করেন।

রোববার (১৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি নিয়ে জাবির প্রধান ফটক ডেইরি গেটের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সংগতি সমাবেশের আয়োজন করেন।

এ সময় প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের কাছে প্রত্যাশা করি, আমাদের প্রতি ন্যায় বিচার করা হবে এবং সমতা বিধান করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা এ দেশকে পেয়েছি। গত ১০ দিন থেকে শিক্ষার্থীরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, গায়ের ঘাম পানি করে যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তা মূলত রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্যই। তাই আমি শিক্ষক হিসেবে তাদের এ যৌক্তিক আন্দোলনকে সংহতি জানাচ্ছি।

ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, আমি আজ এই সংহতি সমাবেশের মাধ্যমে সারাদেশে আন্দোলনকারী সব শিক্ষার্থীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, আপনারা দীর্ঘদিন থেকে একনিষ্ঠভাবে যৌক্তিক দাবি কোটা সংস্কারের জন্য যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, সেটি আসলেই প্রশংসার দাবিদার। আপনাদের দেখে আমার মনে হচ্ছে, আপনারা সেই ৫২’র ভাষা আন্দোলনকারী শহিদদের উত্তরসূরী। একটা দেশে তখনই কোটা প্রয়োজন হয়, যখন এক শ্রেণির লোক সমাজে পিছিয়ে থাকে, মেইনস্ট্রিমে তারা কিছু বলতে পারে না। কিন্তু কোটা কখনো বৈষম্য তৈরি করতে পারে না।
তিনি বলেন, কোটার মাধ্যমে এ দেশকে মেধাশূণ্য করে ফেলা হচ্ছে। এ আন্দোলন শুধু চাকরির আন্দোলন নয়, এটা দেশকে রক্ষা করার আন্দোলন। কারণ মেধা ছাড়া একটা দেশ কখনো উন্নত হতে পারে না। মেধাবীরা ছাড়া আপনি কোনোভাবেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারবেন না। তাই আমি আপনাদের এই যৌক্তিক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।

বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব বলেন, কোটা সংস্কার করুন, মেধাবীদের সূযোগ দিন। আমরা দেখেছি আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়েছে, গতকাল শাহবাগে মামলা করা হয়েছে। এর আগে ১৯৫২ সালে পাকিস্তানি স্বৈরাচার বাহিনী শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালিয়েছে, হামলা-মামলা করেছে, কিন্তু রুখতে পারেনি। ১৯৬৯ এ একই ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীরা যখন কোনো যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যায়নি। কোটা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না। যদি আপনারা এর বিরুদ্ধে কোনো পাঁয়তারা চালানোর চেষ্টা করেন, তাহলে আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে উঠবে।

প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই ঘোষিত শিক্ষার্থীদের বর্তমান এক দফা দাবি হলো- সব গ্রেডে সব ধরনের অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।

/আহসান/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়