দাবি আদায়ে অটল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
ক্যাম্পাস ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি অব্যহত আছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রোববার (১৪ জুলাই) রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)
সারাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও (হাবিপ্রবি) অব্যাহত রয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি।
সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি ও দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ড. মুহাম্মদ কুদরাত-এ-খুদা অ্যাকাডেমিক ভবনের নিচে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে ঘণ্টাব্যাপি অবস্থান কর্মসূচি পালন করে হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। এছাড়া বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের ব্যানারে ড. এম ওয়াজেদ ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা ও ড.মুহাম্মাদ কুদরাত-এ-খুদা অ্যাকাডেমিক ভবনের পাশে কর্মচারীরা কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. সাদেকুর রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষকদের বিষয়ে এখনও কোনো সুষ্ঠু নির্দেশনা আসেনি। যতটুকু জেনেছি তারা বলেছেন, আমাদেরকে ২০২৪ সালে যুক্ত না করে ২০২৫ সাল থেকে প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত করবে। কিন্তু আমরা তো এটা চাইনি। আমরা সবসময়ই আমাদের তিনটি সুস্পষ্ট দাবি তুলে ধরেছি।আমাদের শিক্ষক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যে নির্দেশনা দিবেন, আমরা সে অনুযায়ী কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবো। আমরা আমাদের নায্য দাবি আদায় করেই ছাড়বো।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)
সরকার দাবিগুলো গুরুত্ব না দিলে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. বশির উদ্দীন।
চলমান কর্মবিরতির দশম দিনে পূর্বের মতো একই ঘোষণা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও বিভাগীয় সভাপতিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মবিরতি শেষে শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. বশির উদ্দীন রাইজিংবিডিকে বলেন, সরকার পক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন আলোচনা করেছে। তাদের কাছে তিন দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। কিন্তু দাবির বিষয়ে আশানুরূপ কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। সেজন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলমান রাখার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। সরকার যদি আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নেয়, তাহলে আমরা শ্রেণি কক্ষে ফিরে যাব, এছাড়া সম্ভব না। হয়তো এই সপ্তাহে দাবি মেনে নিলে পরের সপ্তাহে আমরা শ্রেণীকক্ষে ফিরে যেতে পারি। অথবা দাবি মেনে না নিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ইউজিসি সচিব ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ তাদের শিক্ষার্থীদেরকে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবেন মর্মে এই আদালত আশা করে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে বশির বলেন, ওনারা বললেইতো আর হবে না। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে অনুযায়ী শ্রেণি কক্ষে ফিরে যাওয়ার মত পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই থেকে তিন দফা দাবি নিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে নেমেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। তিন দফা দাবি পূরন না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা শ্রেণি কক্ষে ফিরবে না। এমনটাই দাবি ফেডারেশনের। এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
/মেহেদী/