ঢাকা     বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩২

‘হলগুলো ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে, এভাবেই চলতে হবে’

ইবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ১৫ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ২২:৫৭, ১৫ জুলাই ২০২৪
‘হলগুলো ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে, এভাবেই চলতে হবে’

কোটা সংস্কার দাবি ও প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলে যাওয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। সোমবার (১৫ জুলাই) এ ঘটনায় ইবি প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগী মাহফুজ-উল-হক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং অভিযুক্ত মেহেদী হাসান হাফিজ ইবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৪ জুলাই) আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় সোমবার সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিক্ষার্থীর হল কক্ষে যান অভিযুক্ত হাফিজ। এসময় ভুক্তভোগীকে হাফিজ বলেন বলেন, ‘তুই কি রাজাকার? রাজাকার না হলে ওই মিছিলে গেলি কেনো?’

এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাফিজ কক্ষে থাকা ঝাড়ু দিয়ে ভুক্তভোগীর মাথায় সজোরে আঘাত করেন। আরও মারতে গেলে আশেপাশে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে ঠেকান। পরে ভুক্তভোগীকে হল ছেড়ে যেতে হুমকি দেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা। 

ভুক্তভোগী মাহফুজ বলেন, ‘আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাকে যথাযথ নিরাপত্তা প্রদানসহ মারধর ও হুমকির ঘটনায় যথাযথ বিচার দাবি করছি।’

তবে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ। তিনি বলেন, ‘সোয়া ১১টায় আমার প্রোগ্রাম ছিল। ঘুম থেকে উঠেই আমি প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। প্রোগ্রামে থাকা অবস্থায় জানতে পারি কেউ আমার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়ে এমন অভিযোগ তুলেছে। এসবের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এ ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এগুলো করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইবির শহিদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এবিএম জাকির হোসেন বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর ছাত্রলীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও প্রক্টরের সঙ্গে বসেছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগ নেতারা বলেছেন,  ‘প্রধানমন্ত্রীকে গালিগালাজ করা মেনে নেওয়া হবে না। তাছাড়া হলে যারা থাকে সবাই আমাদের দলের। কাকে মারব? আর কাকে বের করে দিব? সব তো আমাদের দলেরই ছেলে। আমরাই বিষয়টা দেখতেছি।”

প্রাধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ কোনো কর্তৃপক্ষ না হলেও হলগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে। তারাই সবাইকে হলে উঠায়। এখন তো মেধার ভিত্তিতে কাউকে হলে উঠানো হয় না। সারা বাংলাদেশ এখন ছাত্রলীগের দখলে। এখন এভাবেই চলতে হবে।’

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু হলের ঘটনা, তাই হল বডি সবচেয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। তারা ব্যর্থ হলে হায়ার বডি হিসেবে আমরা বিষয়টি দেখবো। যাচাই-বাছাই করে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

/ইদুল/মেহেদী/

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়