জাবিতে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কদের মুক্তিসহ ৪ দাবিতে বিক্ষোভ
জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কসহ আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককেও সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সংলগ্ন সড়ক থেকে একটি মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে পুনরায় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া জাবি শিক্ষকরা হলেন— ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব প্রমুখ।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখেছি, কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যা চালানো হয়, ফিলিস্তিনের গণহত্যা চালানো হয়েছে, বাংলাদেশেও স্বৈরাচারী সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে গণহত্যা চালিয়েছে। ডিবি পুলিশ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সমন্বয়কদের দিয়ে আন্দোলন বন্ধ ঘোষণা করিয়েছে, আমরা সেটা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা চাই, আগে সব সমন্বয়কদের মুক্তি দেওয়া হোক, তারপর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার আরেক সমন্বয়ক আহসান লাবিব বলেন, আমরা একটি যৌক্তিক, ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম কোটা সংস্কার করা হোক। মেধাবীদের অধিকার নিশ্চিত করা হোক। একটি সাম্য ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হোক। এ আন্দোলন সরকার বা কোনো দলের বিরুদ্ধে ছিল না। কিন্তু পরে আমাদের উপর ছাত্রলীগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে। যার নির্দেশে এগুলো হয়েছে, সেই স্বৈরাচারী সরকারকে এর জবাব দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, এই স্বৈরাচারী সরকার তার লেজুড়বৃত্তিক ক্যাডার ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে প্রতিহত করতে চেয়েছে। এই আন্দোলন জনগণের আন্দোলন। যে দেশে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের রামদা’র সামনে দাঁড়িয়ে, পুলিশের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করতে পারে সে দেশে স্বৈরাচারী কোন শাসক টিকতে পারে না।
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী বলেন, দেশব্যাপী কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষদের হত্যা করা হয়েছে। একজন শিক্ষক হিসেবে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার চাই। আমি চাই, শিক্ষার্থীরা নিরাপদে ঘুমাক, নিরাপদে থাকুক। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসুক, ক্লাসে ফিরে আসুক।
সমাবেশে উত্থাপিত দাবিগুলো হলো- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া, কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের উপর নৃশংস অত্যাচারের বিচার করা, শিক্ষার্থীদের হত্যার পেছনে জড়িতদের অবিলম্বে বিচার করা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গণ গ্রেফতার বন্ধ করা।
/আহসান/মেহেদী/