ঢাকা     বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ২ ১৪৩১

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তার কাছে অনিরাপদ শিক্ষার্থীরা!

বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৯, ৩ আগস্ট ২০২৪  
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তার কাছে অনিরাপদ শিক্ষার্থীরা!

নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ও তার ফেসবুক স্ট্যাটাস

ফেসবুকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) নিরাপত্তা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। পরে গণসংযোগ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে সাংবাদিকদের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে পুনরায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের আক্রমণকে স্বাগত জানিয়ে গত ১৫ জুলাই ফেসবুকে পোস্ট দেন তরিকুল ইসলাম। এরপর সমালোচনার ঝড় উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। দুদিন আগে এমনটা করা উচিত ছিল। গোপালগঞ্জে দেখার অপেক্ষায়। নেত্রীর প্রশ্নে কোনো ছাড় হবে না।’

তরিকুল ইসলাম তার আইডি থেকে একাধিকবার কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগকে উস্কানি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৭ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে কফিন মিছিলের দিন ছাত্রলীগকে উস্কানি দেন বলেও জানা গেছে।

সর্বশেষ, শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমার নামাজের পর বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা বিশ্বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে কর্মসূচি পালন করতে গেলে তিনি শিক্ষার্থীদের সরাসরি বাধা দেন বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক বর্তমান দেশবাংলা পত্রিকার প্রতিনিধি মো. ছিপু মোল্লা সংবাদ সংগ্রহের জন্য ভিডিও করতে গেলে তার মোবাইল কেড়ে নেন তরিকুল ইসলাম। এতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ওই সাংবাদিকের মোবাইল ফেরত দিতে বাধ্য হন তিনি।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বশেমুরবিপ্রবির প্রধান সমন্বয়ক জসিম বলেন, আমরা কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করিনি। ৭-৮ জন শিক্ষার্থী প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। এ সময় তরিকুল ইসলাম আসেন এবং গণসংযোগ না করার জন্য হুমকি দিতে শুরু করেন। তখন একজন সাংবাদিক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘটনাটি ভিডিও করেছিলেন। তিনি তখন তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করেন এবং এক সাংবাদিকের মুঠোফোন কেড়ে নেন।

ওই কর্মকর্তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন অভিযোগ করে জসিম আরও বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই পুলিশ এবং এরপর ছাত্রলীগের কর্মীরা চলে আসেন। পুলিশের সঙ্গে আমরা কথা বলে যার যার রুমে চলে যাচ্ছিলাম। পথের মধ্যে আমাদের এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের কর্মীরা বেধড়ক মারধর করে। গুরুতর অবস্থায় তাকে গোপালগঞ্জ সদর হসপিটালে পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরাই অনিরাপদ। নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমাদের নিরাপত্তা না দিয়ে ছাত্রলীগের পক্ষ নিয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কী করব না করব, সেটা আমাদের বিষয়। নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাধা দেওয়ার কে?

এ বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা তারিকুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলব না। আপনাদের যা মন চায়, করেন।

/হৃদয়/মেহেদী/

ঘটনাপ্রবাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়