জাবি শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ
জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
শহিদ সালাম—বরকত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে ও প্রশাসনের পক্ষে অবস্থান করার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শহিদ সালাম—বরকত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডুকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে, শনিবার (১০ আগস্ট) রাত সোয়া ১১টায় শহিদ সালাম—বরকত হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে শিক্ষক কোয়ার্টারে গেলে সেখানে প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তখন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষকে রোববার (১১ আগস্ট) দুপুর ১২টার মধ্যে লিখিতভাবে পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দেন।
রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে তিনি শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটামের ভিত্তিতে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগপত্রে তিনি পারিবারিক নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করেছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার রাতে শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু বলেন, এই পদত্যাগের জন্য আমি পূর্ব থেকেই প্রস্তুত ছিলাম। আওয়ামী প্রশাসনের যে অবস্থা এবং দেশের যে পরিস্থিতি, তাতে মূলত এটাই আমাদের কাম্য ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যে মিছিল নিয়ে আসলো, এভাবে না হয়ে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত আসতে পারতো। শিক্ষার্থীরা মিছিল ও স্লোগান নিয়ে আসলো, এটা উচিত হয়নি। তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে- যে শিক্ষার্থীরা এসেছিল, তারা কি পুরো হলের প্রতিনিধিত্ব করে?
প্রাধ্যক্ষের প্রশ্নের জবাবে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের হলের প্রাধ্যক্ষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন। তিনি হলের প্রাধ্যক্ষ হয়েও শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেননি, শিক্ষার্থীদের বিপদে সাহায্য করেননি এবং তাদের দায়িত্ব নেননি। শিক্ষার্থীরা যখন অনিরাপদ ঠিক তখনই নিজের বাসায় রাতে দুজন গার্ড রাখতেন, আর সম্পূর্ণ হল পাহারা দেওয়ার জন্য রাতে একজন গার্ড রাখতেন। সুতরাং তিনি তার প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকার নৈতিক দিক হারিয়েছেন।
এদিকে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ পত্রে উল্লেখিত বক্তব্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা জানান, প্রাধ্যক্ষ হলে থাকাকালীন যে নিয়োগ বাণিজ্য করে গেছেন এবং বৈষম্যের পক্ষে ছিলেন, সেই অপরাধ ঢাকতে প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছেন এবং মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। পদত্যাগপত্রে উল্লেখিত কারণের কোন ভিত্তি নেই। এছাড়া প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে হলের অবকাঠামগত উন্নয়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না থাকা এবং ছাত্রলীগের সঙ্গে সমঝোতা করে নিয়োগ বাণিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে।
/আহসান/মেহেদী/