ঢাকা     বুধবার   ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ২ ১৪৩১

বাকৃবিতে রাজনীতি বন্ধের দাবিতে ডিন-শিক্ষার্থীদের বৈঠক, আটক ৩

বাকৃবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২৯, ১৩ আগস্ট ২০২৪  
বাকৃবিতে রাজনীতি বন্ধের দাবিতে ডিন-শিক্ষার্থীদের বৈঠক, আটক ৩

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ এবং দলীয় রাজনীতির ব্যানারে নিপীড়নকারীদের বিচারের দাবিতে ডিনদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, সন্দেহবশত তিনজনকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। আটককৃতরা বহিরাগত ছাত্রদল সর্মথক বলে জানা গেচে। রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে তাদের প্রবেশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আটককৃতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় হস্তান্তর করেন শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক এবং কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার এবং ভেটেরিনারি অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান প্রমুখ।

জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজনীতি বন্ধের জন্যে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিল শেষে তারা প্রশাসনিক ভবনের ভিতরে ঢুকে তালা মেরে দেন। পরে তারা প্রশাসনিক বিভিন্ন শাখার প্রধানদের সঙ্গে রেজিস্ট্রার অফিসে আলোচনায় বসেন। সেখানে ফলপ্রসূ উত্তর না পাওয়ায় তারা ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়কের সঙ্গে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষার্থীদের আলোচনা হয়। প্রায় ২ ঘণ্টা আলোচনা চলাকালে শিক্ষার্থীরা ডিনদের কাছে ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধের জন্যে লিখিত চেয়েছিলেন। কিন্তু ডিনবৃন্দ এটা তাদের এখতিয়ারের বাইরে বলে উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে শতভাগ একমত। ক্যাম্পাসে রাজনীতি আমিও চাই না। কিন্তু এখন ক্যাম্পাসে কোনো প্রশাসন নেই। উপাচার্য, রেজিস্ট্রার সবাই পদত্যাগ করেছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে উপাচার্য নিয়োগ হলে প্রথমে জরুরি মিটিং ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। পরে সিন্ডিকেট ডেকে আমরা রাজনীতি বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করবো। আমি ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক হিসেবে বিষয়টি লিখিত আকারে সিন্ডিকেটে তুলে ধরবো।

এদিকে, আলোচনা শেষে বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা ডিন অফিসের সামনে আসলে সন্দেহবসত বহিরাগত তিনজনকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল ফোন যাচাই করে নিশ্চিত হন, আটককৃতরা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।

আটককৃতদের মধ্যে রিফাতের বাড়ি বাকৃবির করিম ভবনের কাছে এবং তিনি শহর ছাত্রদলের সমর্থক। এছাড়া তৈয়ব এবং হিরা নামের দুজনের বাড়ি বাকৃবির ফিশারিজের মোড়ে এবং তারাও ময়মনসিংহ শহরে ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত বলে মোবাইল ফোন ও ফেসবুক দেখে শিক্ষার্থীরা নিশ্চিত হন।

তাদের আটকের পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে উপস্থিত শিক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি শান্ত হলে শিক্ষার্থীরা ওই আটককৃতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় শিক্ষকদের উপস্থিতে হস্তান্তর করেন।

তবে আটককৃত ছাত্রদল সমর্থিতদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান।

/লিখন/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়