হাবিপ্রবিতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বোমা উদ্ধার
হাবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) ছাত্রদের পাঁচটি আবাসিক হলে তল্লাশি চালিয়ে পেট্রোল বোমাসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি মদের বোতল, মাদক ও মাদকদ্রব্য সেবনে ব্যবহৃত উপকরণ, কনডমসহ নানা ক্ষতিকর বস্তু পাওয়া গেছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ২টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে হলভিত্তিক টিম গঠন করে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তাজউদ্দীন আহমেদ হল, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ রাসেল হল (নূর হোসেন হল) ও শেখ রাসেল (এক্সটেনশন) হলের শতাধিক কক্ষ থেকে এসব অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার করেন অভিযানিক টিমের সদস্যরা।
অভিযানে বিশ্ববিদ্যালয়টির শেখ রাসেল (নুর হোসেন) হলে ৯৬টি রাম দা,দুটি হকিস্টিক, ৯২টি রড, ১৫৭টি এসএস পাইপ, ২৫৭টি বাঁশের লাঠি, তিনটি মদের বোতল, ১৬টি হেলমেট, একটি চেইন, চার প্যাকেট কনডম, চারটি প্লাস্টিক পাইপ, চারটি পেট্রোল বোমা এবং কিছু মাদক সামগ্রী পাওয়া গেছে।
শেখ রাসেল (এক্সটেনশন) হলে ২৩টি রাম দা, পাঁচটি দা, ৪৮টি রড, ৪৫টি পাইপ, সাতটি হকিস্টিক, ২৭টি লাঠি, ১১টি মদের বোতল, ২৩টি হেলমেট, একটি গাঁজার কল্কি।
তাজউদ্দীন আহমেদ হল তল্লাশি করে সাতটি রাম দা, ২৭টি রড, ১৪৯টি লাঠি, দুটি বাঁশ, ১৯টি পাইপ, একটি করাত, একটি প্লাস, একটি চেইন, দুইটি স্ট্যাম্প, একটি হকিস্টিক, একটি মদের বোতল, একটি কল্কি পাওয়া গেছে।
এছাড়া, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলে তল্লাশি করে নয়টি রাম দা, ৫৫টি এসএস পাইপ, ৪০টি বাঁশের লাঠি, ৩৬টি বাঁশ ও কাঠের লাঠি, ৭২টি রড ও প্লাস্টিকের চিকন পাইপ, দুটি হেলমেট, একটি ব্যবহৃত মদের বোতল, কিছু মাদকদ্রব্য সেবনে ব্যবহৃত উপকরণ পাওয়া গেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল তল্লাশি করে ১৮টি রাম দা, ৭১টি এসএস পাইপ, ১৮টি বাঁশের লাঠি, ১১৩টি লোহার রড, ১৩টি হকিস্টিক, ১৫টি লাঠি, আটটি প্লাস্টিক পাইপ, দুটি হেক্সা ব্লেড, একটি ডেগার, পাঁচটি মদের বোতল পাওয়া গেছে।
সাংবাদিক সমিতির উপস্থিতিতে অভিযানকালে হল প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন। উদ্ধারকৃত অস্ত্রসহ সব অস্ত্র-শস্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সাইফুর রহমানের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়।
শিক্ষকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে এমন অস্ত্র পাওয়া কাম্য নয়। তবে আশা রাখছি, তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে সংশোধন হবে এবং তারাই ভবিষ্যতে তারুণ্যের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলগুলোর নিরাপত্তা চাই। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে যেন শান্তি, শৃঙ্খলার অবনতি না করা হয়।
এ ব্যাপারে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সাইফুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
/সংগ্রাম/মেহেদী/