অভিভাবকহীন হাবিপ্রবি: নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উপাচার্য চান শিক্ষার্থীরা
হাবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
কোটা আন্দোলনের তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিদের মাঝে পদত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়। বাদ যায় না দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও (হাবিপ্রবি)।
গত ৯ আগস্ট রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেন উপাচার্য। একই দিনে পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক। এরপর ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অন্য শিক্ষকবৃন্দও পদত্যাগ করেন। ফলে প্রশাসকহীন হাবিপ্রবিতে এখন টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সব কার্যক্রম।
জানা গেছে, গত ১২ আগস্ট হল খুলে দেওয়া হয়। গতকাল রোববার (১৮ আগস্ট) থেকে শুরু হয় ক্লাস কার্যক্রম। কিছু অনুষদ ও বিভাগে ক্লাস চললেও বেশিরভাগই বিভাগে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয়নি। তবে তারা দ্রুতই ক্লাস কার্যক্রম শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে চালু ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল।
যন্ত্র ও পরিবহন শাখার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, এখন থেকে নিয়মিত সিডিউল অনুযায়ী বাস চলাচল করবে।তবে কোনো জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে বাস বন্ধ থাকবে।
খোলা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এবং টিএসসি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান চলমান সঙ্কট কাটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি সমন্বয় টিম করা হয়েছে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি শান্ত করা এবং বিবিধ বিষয় নিয়ে কাজ করছেন।
তবে শিক্ষার্থীদের চলতে থাকা সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়নি। প্রশাসন না থাকায় কবে নাগাদ পরীক্ষা শুরু হতে পারে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। এদিকে আটকে আছে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নেই কোনো প্রক্টরিয়াল বডি।
ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই উপাচার্য চাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলছেন, উপাচার্য নিয়োগ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সঙ্কট অনেকটাই দূর হবে। অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ সচল হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি আগস্ট মাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে দেখতে চান।
শিক্ষার্থীরা বলেন, নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলে পড়াশোনার পরিবেশ সমুন্নত থাকবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অন্তরে ধারণ করেন। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিষয় সম্পর্কে তার পূর্ণ জ্ঞান ও সব তথ্যের ব্যাপারে অবগত।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে হাবিপ্রবি। ২৫ বছরের যাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে উপাচার্য হিসেবে সাতজন দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ৫ আগস্ট হাবিপ্রবির সপ্তম উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান পদত্যাগ করেন।
/সংগ্রাম/মেহেদী/