ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২ ১৪৩১

নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী ফয়েজের সঙ্গে করা অন্যায়ের বিচারসহ ৫ দাবি

নোবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৩১, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
নোবিপ্রবি শিক্ষার্থী ফয়েজের সঙ্গে করা অন্যায়ের বিচারসহ ৫ দাবি

ফেসবুক পোস্টে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদকে সাময়িক বহিষ্কারসহ তার সঙ্গে করা বিভিন্ন অন্যায়ের বিচার দাবি করা হয়েছে। এ সময় তারা পাঁচ দফা দাবি পেশ করেন।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানান নোবিপ্রবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় লঘু পাপে গুরু দণ্ডের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষার্থী ফয়েজ আহমেদ। যে ঘটনায় তিনি বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, সেটি ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর ঘটে। মুহম্মদ মুমিন আদদ্বীন নামক একটি আইডি থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ নামক একটি গ্রুপে নোবিপ্রবির বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ভিপি নুরের ছবি এডিট করে পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টটি সমালোচনা করে তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি শাহরিয়ার নাসের আবার পোস্ট করে। সেখানে ফয়েজ আহমেদ কমেন্ট করেন, ‘এখানে দুঃসাহসের কিছু তো দেখছি না।’ এই একটি কমেন্টকে কেন্দ্র করে সাময়িক বহিষ্কার, শোকজ, জেলখানায় পাঠানো এবং শিক্ষাজীবনের চারটি বছর হারিয়েছেন ফয়েজ আহমেদ।  

তারা আরো বলেন, ফয়েজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে ১৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িক বহিষ্কার দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে। নোটিশ প্রদানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা দিয়ে ১৫ অক্টোবর তাকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়। দীর্ঘ চার মাস কারাগারে থেকে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে জামিনে ছাড়া পেলেও তাকে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার লিখিত জবাবের কোনো সুযোগ দেওয়া হয় নি। তার প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে।

সাময়িক বহিষ্কারের মাশুল গত ৪ বছর যাবৎ দিতে হয়েছে তাকে, তার ক্যারিয়ার শেষ করার ঘটনার বিচার দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, ফয়েজের বিরুদ্ধে মামলায় জড়িত তৎকালীন প্রক্টর নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, ছাত্রলীগ নেতা প্রিতম আহমেদ, তৎকালীন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার নাসের, শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সজিব এবং বিএমএস বিভাগের শিক্ষার্থী ও পরবর্তীতে ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া বিভিন্নভাবে ফয়েজ আহমেদ ও তার পরিবারকে হয়রানি করেছে। তার এই ঘটনার তদন্তে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে আহ্বায়ক ছিলেন শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান বিপ্লব মল্লিক, সদস্য তৎকালীন প্রক্টর নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক আফসানা মৌসুমী, ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট আনিসুজ্জামান রিমন এবং সদস্য সচিব ছিলেন নোবিপ্রবি বিএনসিসির পিইউও এ কিউ এম সালাউদ্দিন পাঠান। কিন্তু কমিটি এ ঘটনার কোনো ধরনের তদন্ত করেনি। আমরা অভিযুক্ত প্রত্যেকের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- ২৪ ঘণ্টার ভিতরে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাদী হয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফয়েজের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং অভিযুক্তদের তদন্তকালীন সময়ে স্ব-স্ব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ কোনো প্রশাসনিক দায়িত্ব রাখা যাবে না।

/ফাহিম/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়