ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২ ১৪৩১

সীমান্তে স্বর্ণা ও জয়ন্ত হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৯, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
সীমান্তে স্বর্ণা ও জয়ন্ত হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

বিএসএফ কর্তৃক স্বর্ণা দাস ও শ্রী জয়ন্তকে হত্যা এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং কর্তৃক বাংলাদেশকে হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজী ভবন থেকে মিছিল নিয়ে সিনেট সংলগ্ন প্যারিস রোডে অবস্থান নিয়ে এ মানববন্ধন করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘পাক চীন সীমান্তে কাপো থরো থরো, বাংলার সীমান্তে কেনো শিশু মারো?’, ‘স্বর্ণা আমার বোন জয়ন্ত আমার ভাই, ভাই-বোনকে মারলি কেন মোদির কাছে জবাব চাই’, ‘সীমান্তে আর কত বাংলাদেশী মরবে ভারত?’, ‘বাংলাদেশ কতকাল নিশ্চুপ থাকবে?’, ‘ফেলানী থেকে স্বর্ণা, স্বর্ণা থেকে জয়ন্ত তারপর?’, ‘বাংলাদেশের জলসম্পদ নিয়ন্ত্রণ কারী আগ্রাসী দিল্লির দখলদারিত্ব নিপাত যাক’- লেখা সম্বলিত প্লাকার্ড দেখা যায়।

এছাড়া মিছিলে ‘দিল্লি না ঢাকা?, ঢাকা ঢাকা’, ‘আমার বুকে তিস্তার জল কাইড়া নিল কে?’, ‘দিল্লির দাদাগিরি মানি না মানব না’, ‘সীমান্তে লাশ কেন, কসাই মুদি জবাব দে’, ‘সীমান্তে মানুষ মরে বিজিবি কি করে?’, ‘ফেলানী থেকে স্বর্ণা দাস, সীমান্তে আর কত লাশ?’, ‘দিল্লির আগ্রাসন, জনগণ রুখে দাও’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।

মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আবার যদি দাঁড়াতে হয়, সারা দেশের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সমাজ আবার রুখে দাঁড়াবে। ভারতের চামচারা তাদের বন্ধুত্বের নমুনা দিচ্ছে। আগে ভারতকে হাজার টন ইলিশ পাঠালে ওরা আমাদের আবরার, স্বর্ণা, জয়েন্ত, ফেলানীর মতো লাশ উপহার দিয়েছে। আমরা শেখ হাসিনা-মোদির মতো বন্ধুত্ব চাই না। বন্ধুত্ব করতে হবে দেশের সঙ্গে দেশের। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করতে তারা নানা প্রচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে। ভারতের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। স্বর্ণা, ফেলানীর হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের না হওয়া পর্যন্ত আমরা ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সিদ্ধান্ত নিবে না। এতদিন পর্যন্ত যত হত্যা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে হবে।

রাষ্ট বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তারেক ফজল বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা এ স্বাধীনতা অনুভব করতে পাচ্ছি। বিএসএফ কর্তৃক সিমান্তে স্বর্ণা, জয়ন্ত খুন এবং ভারতীয় প্রতিমন্ত্রী রাজনাথ সিং কর্তৃক বাংলাদেশকে জঘন্য ও বেআইনি হুমকির প্রদানের বিরুদ্ধে এখানে রাষ্ট্রনীতি বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে আমরা তীব্র ও নিন্দা জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় প্রতিমন্ত্রী রাজনাথ সিং’কে আমরা বলতে চাই, আপনি আপনার নিজের চর্কায় তেল দিন। আপনি নিজেই নিজ দেশকে বাঁচান। বাংলাদেশকে নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না। বাংলাদেশে যদি একটা বুলেট ছোড়া হয়, তাহলে আমরা ১০টা বুলেট ছুড়বো।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, বাংলাদেশ আর সেই পর্যায়ে নেই যে আমরা চুপ করে বসে থাকবো না। আমরা ব্যাক্তির সঙ্গে ব্যাক্তির বন্ধুত্ব চায় না, আমরা দেশের দেশের বন্ধুত্ব চায়। বাংলাদেশ এখন আর ফ্যাসিবাদের সরকার অধিনে নেই। আজ যে হত্যাকাণ্ডগুলো হচ্ছে, তা পৃথিবীর আর কোথাও হয় না। এগুলো আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে। আমরা চায় ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে এর সুষ্ঠু বিচার করা হোক।

এ সময় মানববন্ধনে রাবির বিভিন্ন বিভাগের চার শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

/ফাহিম/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়