গুরুত্ব পাচ্ছে রবির সেন্টার ফর মেন্টাল হেলথ
রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
শুধু শারীরিক সুস্থতাই নয়, দরকার মানসিক সুস্থতাও। কারণ শারীরিক স্বাস্থ্যের ন্যায় মানসিক স্বাস্থ্যেরও সমান গুরুত্ব রয়েছে। বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশন পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০২১ সালে ১০১ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন এবং দেশের প্রায় ৮৪.৬ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।
শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সার্বিক কল্যাণ বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের (রবি) অর্থনীতি বিভাগের উদ্যোগে সেন্টার ফর মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস স্থাপন করা হয়েছে। দেশের নবীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম এ উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রশংসা কুড়াচ্ছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ।
সেন্টারটির কার্যক্রম সুচারুরূপে সম্পাদনের জন্য দেশি-বিদেশি সাতজন সদস্যের একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বরুণ চন্দ্র রায় ও পিংকি রানী দে এবং প্রভাষক মো. শামসুদ্দিন সরকার। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ পরামর্শক হিসেবে রয়েছেন নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও দ্যা স্কুল অব নেপালের সভাপতি ড. নরেন্দ্র সিং থাগুন্না, যুক্তরাজ্যের ইন্টারনাল মেডিসিন ট্রেইনি হেলথ অ্যাডুকেশনের ডা. সুস্মিতা দে পিংকি এবং ঢাকার সাইকিওর লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী অফিসার মুরাদ আনসারী।
সেন্টারের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান বিজন কুমার বলেন, সারাবিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে যুবসমাজ ইন্টারনেট তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। এতে তাদের একাডেমিক পড়াশোনা যেমন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে তারা জড়িয়ে পড়ছে মাদকসহ নানান সমাজ ও রাষ্ট্রদ্রোহী কাজে।
তিনি বলেন, জীবন যুদ্ধে এক পর্যায়ে হার মেনে অকালে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে বহু তরুণ। এ সব বিষয়কে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার শেখানোর পাশাপাশি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। সেন্টার ফর মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সে সব কর্মকাণ্ডের একটি নতুন সংযোজন।
জানা গেছে, বিজন কুমার ও আমিনুল ইসলাম ২০২০ সালে বাংলাদেশের ২৩৪ জন শিক্ষার্থীর উপর গবেষণা করে পান, যদি একজন শিক্ষার্থী অতিরিক্ত এক ঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় ব্যয় করে, তবে তার জিপিএ ০.৮৪৩ কম আসতে পারে।
প্রভাষক মো. শামসুদ্দিন সরকার, আসিফ ইমতিয়াজ, সেজুতি হক ও কাজী তানভীর মাহমুদ ২০২১ সালে ৪১০ জন শিক্ষার্থীর উপর গবেষণা করে পান, যে শিক্ষার্থী যত বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবে, তার অবসাদগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি।
বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গুরুত্ব পাচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ও সশরীরে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।
/হাবিবুর/মেহেদী/