ফেসবুকে যা বললেন ঢাবি শিবির সভাপতি দাবি করা সাদিক
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি দাবি করে সাদিক কাইয়ুম নামে এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে বার্তা দিয়েছেন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকাল পৌনে ৪টায় তিনি এ বার্তা পোস্ট করেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ১৭ বছর পর আত্মপ্রকাশ করলো ঢাবি শাখা শিবিরের সভাপতি।
ঢাবি শাখা শিবিরের সভাপতি দাবি করা সাদিক কাইয়ুম ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসেবে এতদিন তিনি পরিচিত ছিলেন। জুলাই বিপ্লবে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ঘোষিত ৯ দফার অন্যতম রচয়িতাও ছিলেন তিনি।
জানা গেছে, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতনের ঢাবি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তোলেন। এ পরিস্থিতিতে ঢাবির শিবির সভাপতি সাদিক কাইয়ুম তার ফেসবুক পোস্টে ছাত্র রাজনীতিতে ব্যপক ইতিবাচক সংস্কার আসবে বলে উল্লেখ করেন। কেউ বিরোধী মতের ওপর চড়াও হবে না বলে মন্তব্য করেছেন। ওই পোস্টে তিনি রাজনৈতিক সংস্কারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন।
ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে ঢাবি ছাত্র শিবির সভাপতি বলেন, “ফ্যাসিস্ট শোষণ শুধু ছাত্র রাজনীতি নয়, রাজনীতির সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদে কোনো রাজনীতি থাকে না। বিরাজনীতি ফ্যাসিবাদের ভাষা। ফ্যাসিবাদ ছাড়া সকল বাদ, ইজম ও রাজনীতি ফ্যাসিবাদে অনুপস্থিত থাকে। ফ্যাসিবাদে কোন রাজনীতি নাই, শুধু ফ্যাসিবাদই আছে। টেন্ডারবাজি, গুম, খুন, ক্রসফায়ার, ফাঁসি, ধর্ষণ, রাহাজানি, দুর্নীতি এসব রাজনীতি না। এগুলি ফ্যাসিবাদ। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের গত ষোল বছরের ভয়ংকর দিনগুলো কিংবা তারও পূর্বের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো রাজনীতির প্রতি তীব্র ঘৃণা সৃষ্টি করেছিলো তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। কিন্তু চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সমস্ত ভুল ভেঙে দিয়েছে। রাজনীতি সম্পর্কে তৈরি হয়েছে নতুন সচেতনতা। দেয়ালে দেয়ালে লেখা হচ্ছে, ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরী’।”
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি এই স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছে রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট এবং দলের আওতামুক্ত রাজনীতি সচেতন ছাত্র-জনতা। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানোর চেয়ে বড় রাজনীতি আর কোন রাজনীতিই না। আমরা চাই সেই রাজনীতির আদর্শে ছাত্র রাজনীতির ব্যাপক ইতিবাচক সংস্কার হবে। ভবিষ্যতের ছাত্র রাজনীতিতে মত-দ্বিমত হবে, যুক্তির পাথরে সবাই বিক্ষিপ্ত হবে, কিন্তু কোন হকিস্টিক কিংবা স্ট্যাম্প থাকবে না। কোনো গেস্টরুম, গণরুম থাকবে না। চব্বিশের আকাঙ্ক্ষাকে বুকে নিয়ে এগিয়ে যাবে এই ছাত্র রাজনীতি। মধুতে ভিন্নমতের কেউ চা খেলে অপর পক্ষের কেউ তেড়ে আসবে না। একাডেমিক পরিবেশে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ছাত্র সংসদ ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি।’
সাদিক বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে ভিন্নমতের প্রতি থাকবে সম্মান, কিন্তু কেউ যেন স্বৈরাচারী না হয়ে উঠতে পারে সে ব্যাপারে রাখতে হবে সজাগ ও পূর্ণ দৃষ্টি। এই রাজনৈতিক সংস্কারে অবশ্যই চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হবে, তা-না হলে ভেস্তে যাবে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা চাই ছাত্র রাজনীতির সংস্কার; গবেষণা, পলিসি ডায়ালগের মধ্য দিয়ে তা বাস্তবায়িত হোক। এ লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
/রনি/মেহেদী/