ঢাকা     সোমবার   ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৮ ১৪৩১

গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই মাসে গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ৪টায় ‘জুলাই গণহত্যা বিচার নিশ্চিত পরিষদ’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। প্রায় ২০ মিনিট অবরোধের পর কর্মসূচি শেষ করা হয়। অবরোধ চলাকালে মহাড়কের আরিচাগামী লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

এর আগে, বিকাল বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল নিয়ে মহাসড়কের দিকে যান তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘বিচার চাই বিচার চাই, ভাই হত্যার বিচার চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সমাবেশে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসান বলেন, জুলাই হত্যার খুনিরা বিভিন্নভাবে ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। তাদের দেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। যারা বহিরাগত এনে ক্যাম্পাসে হামলা চালালো, তাদের একজনও এখনো গ্রেফতার হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেফতারের আওতায় আনতে হবে। তাদের নিরাপত্তার ও মানবাধিকারের কথা চিন্তা করে সরকারের উচিত তাদের আইনের আওতায় আনা। অন্যথায় গণপিটুনির মতো ঘটনাগুলো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গণপিটুনিতে নিহত শামীম মোল্লা তার জবানবন্দিতে ১৫ জুলাই হামলার ঘটনায় জড়িত একজন শিক্ষকের নাম বলে গেছেন। অথচ তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন, সাভার-আশুলিয়ায় যারা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের বিচার এখনো হয়নি। ক্যাম্পাসে গত ১৫ জুলাই যারা ছাত্রদের উপর হামলা চালিয়েছিল, তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আগামি সাতদিনের মধ্যে সারাদেশে সব খুনিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসররা যদি মনে করে, আমরা ঘরে ঢুকে গেছি, তাহলে তারা ভুল ভাবছে। আমাদের গণঅভ্যুত্থান এখনো শেষ হয়নি।

মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে সাভার এলাকায় গুলিতে শহিদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের পিতা বুলবুল কবির জানান, পিতার ঘাড়ে সন্তানের লাশের থেকে কষ্টের আর কিছুই হতে পারে না। আন্দোলনে এক হাজারেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছে। কিন্তু একমাস পেরিয়ে গেলেও তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি। সাভারে অনেকে শহিদ হয়েছে। কিন্তু একজন আসামীও এখন পর্যন্ত ধরা হয়নি।

শহিদ শ্রাবণ গাজীর পিতা মান্নান গাজী বলেন, এ আন্দোলনে বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে ছাত্রদের উপর গুলি চালিয়ে হাজার হাজার মানুষ শহিদ হয়েছে। আমার ছেলে শ্রাবণও এই সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে শহিদ হয়েছে। আমার দাবি একটাই, এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।

এদিকে, বিক্ষোভ কর্মসূচি ও মহাসড়ক অবরোধ শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা তিন দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো- অবিলম্বে খুনী-দোসরদের চিহ্নিত করে গঠনমূলক সরকারি মামলা নিশ্চিত করা; সাতদিনের মধ্যে সারাদেশের খুনী-দোসরদের গ্রেফতার নিশ্চিত করা এবং তিন মাসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা।

/আহসান/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়