ঢাকা     সোমবার   ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৫ ১৪৩১

উপাচার্যের কাছে ইবি শিক্ষার্থীদের ৪৬ প্রস্তাব

ইবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪  
উপাচার্যের কাছে ইবি শিক্ষার্থীদের ৪৬ প্রস্তাব

শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণে উপাচার্যের কাছে ৪৬টি সংস্কার ভাবনা প্রস্তাব করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের এক মতবিনিময় সভায় ইবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এসব সংস্কার ভাবনা প্রস্তাব করেন।

শিক্ষার্থীদের এসব প্রস্তাবের জবাবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্পেশালাইজড বিশ্ববিদ্যালয়। যার বৈশিষ্ট্য অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে ইসলামী শিক্ষার সমন্বয় সাধন করা। আধুনিক শিক্ষাকে বাদ দিয়ে যেমন জাগতিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা যাবে না, তেমনি ইসলামী শিক্ষার উন্নয়ন না ঘটালে সুন্দর সমাজ গঠনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণ হবে না। এজন্য আমার মূল কাজ শিক্ষা সংস্কার। 

তিনি বলেন, এ নতুন বাংলাদেশ আর পেছনে ফিরে যাবে না। দেশের প্রতিটি অঙ্গন হবে দুর্নীতিমুক্ত। আমরা সবাইকে নিয়েই দেশ সংস্কারের মাধ্যমে শহিদদের রক্তের মূল্য দিতে চাই। আমি আইন অনুসারে সব কাজ করবো। আইন মেনে কাজ করলে কোথাও কোনো ধরনের বৈষম্য থাকবে না। আমি আপনাদের সব প্রস্তাব পূরণে কাজ করবো। দায়িত্ব যখন নিয়েছি আমি আমার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবো।

তিনি আরও বলেন, আমি তোমাদের উপাচার্য। আমি প্রতিদিন তোমাদের মুখ দেখতে চাই। আমি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মডেলকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুসরণ করার চেষ্টা করবো। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য ছিল একটি আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববিদ্যালয়। এ ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার জন্য সবাইকে নিয়ে আমি নিরলস চেষ্টা করবো, এ প্রতিজ্ঞা করছি।

শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত ৪৬টি সংস্কার ভাবনা অন্যতম হলো- ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে, শিক্ষাকার্যক্রম ও প্রশাসন পরিচালনায় লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (এলএমএস) মতো অত্যাধুনিক পদ্ধতি প্রচলন করতে হবে, সেশনজটের শিকার বিভাগগুলোতে সেশনজট নিরসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে, শিক্ষার্থীদের একটি অভিন্ন পরিচয়পত্রের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যাবলী সম্পন্ন করতে হবে, প্রশাসনিক ভবনের সেবার মান দ্রুততম সময়ের ভিতরে আধুনিকীকরণ ও কাজের প্রতি অবহেলা নিরসন করতে হবে, পাশাপাশি,  অনলাইন পেমেন্ট প্রক্রিয়া সচল করতে হবে, শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনের ভিত্তিতে  স্কলারশিপ নিশ্চিত করতে হবে, শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত করার লক্ষ্যে সিলেবাসে গবেষণা অন্তর্ভুক্তি এবং গবেষণা সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে, প্রতি বিভাগে মানসম্মত ইংরেজি শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, বিভিন্ন বিভাগে বাস্তব ও কর্মসংস্থানমুখী কোর্স অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, শিক্ষকদেরকে রুটিন অনুযায়ী নিয়মিত ক্লাস নেওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে, পরীক্ষার সাতদিন পূর্বেই টিউটোরিয়াল ও ক্লাস উপস্থিতির নম্বর নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দিতে হবে, পরীক্ষার খাতা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ রাখতে নীতি প্রণয়ন করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে মেধা ও যোগ্যতাকে প্রাধান্য দিতে হবে, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

প্রস্তাবনার মধ্যে আরও রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি সপ্তাহে সাতদিন রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা রেখে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে, বই ইস্যু সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করতে হবে, জুলাই বিপ্লবে বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ও তাদের দোসরদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে মামলা দায়ের করতে হবে, গত ১৫ বছরে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও তাদের দোসরদের নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার শিকার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত মেধার ভিত্তিতে সিট প্রদান নিশ্চিত করতে হবে, হল ডাইনিং এর পরিচ্ছন্নতা, খাবারের পুষ্টি ও গুনগত মান নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রয়োজনে ভর্তুকি বৃদ্ধি করতে হবে।

/ইদুল/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়