ভর্তি জালিয়াতির বিষয়ে নিরব পবিপ্রবি প্রশাসন

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত রাবিবের বিরুদ্ধে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় তিনি অন্য একজনকে দিয়ে প্রক্সির মাধ্যমে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন।

সম্প্রতি পবিপ্রবিতে কর্মরত সাংবাদিকদের যৌথ অনুসন্ধানে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। তবে এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দায়িত্বে থাকা পবিপ্রবি প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন ফরম পূরণের সময় রাবিব সব তথ্য সঠিকভাবে দিলেও তার ছবির জায়গায় অন্য একজনের ছবি দেন। ভর্তি পরীক্ষার দিন রাবিবের পরিবর্তে অন্য ব্যক্তি পরীক্ষা দেন। এমনকি ভর্তির দিনও অপর ব্যক্তিই এসে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। অনুসন্ধানে রাবিবের ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের ছবির সঙ্গে রাবিবের চেহারার মিল পাওয়া যায়নি।

বিষয়টা নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তসহ সংশ্লিষ্ট অনুষদের বেশ কয়েকজন শিক্ষককে জিজ্ঞেস করা হলে তারাও ভর্তি জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানান। তাছাড়া তৎকালীন ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটিও তার জালিয়াতির বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত রাবিবের প্রবেশপত্র

এ প্রসঙ্গে ২০১৭-১৮ সেশনের ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক চিন্ময় বেপারী বলেছিলেন, আমরা অভিযুক্ত ছাত্রের ব্যাপারে খোঁজ করেছি, ভর্তি ফাইলের ছবির সঙ্গে তার চেহারার মিল পাওয়া যায়নি। যে ব্যক্তি পরীক্ষা দিয়েছে, ভর্তির দিন সে এসে ভর্তি হলেও পরবর্তীতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী অ্যানরোলমেন্টের সময় তার নিজের ছবি দিয়ে ফরম পূরণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, ডিন অফিস ভর্তির ফাইলগুলোর সঙ্গে পরীক্ষার অ্যানরোলমেন্ট ফরম চেক করলে এ সমস্যা হতো না। এ সমস্যা সমাধানে ভর্তি ফরমের এক কপি ডিন অফিসে রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শুধু ইয়াসিন আরাফাত রাবিবই নয়, একই প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী- এমনটাই আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. হেমায়েত জাহান বলেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রক্সি সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, সেটা বর্তমান কিংবা প্রাক্তন যে ছাত্রই হোক না কেন, তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল করবে।

তিনি আরও বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। আপনাদের কাছ থেকেই শুনলাম। এখন তো বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নেই। উপাচার্য আসলে তদন্ত কমিটি গঠন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত রাবিবের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।