ঢাকা     শুক্রবার   ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ২ ১৪৩১

কুষ্টিয়ায় লালন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক: রাবি অধ্যাপক

রাবি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৫, ১৮ অক্টোবর ২০২৪   আপডেট: ১২:৫৮, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
কুষ্টিয়ায় লালন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক: রাবি অধ্যাপক

লালনকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। সে এখন আমাদের জাতীয় সম্পদ। বিশ্বের সকল মুসলিম-অমুসলিম দার্শনিকের সাথে লালনের মিল পাওয়া যায়। তাদের সবার উদ্দেশ্যে ছিল বিশ্ব মানবতার কথা বলা। আমি সবাইকে আহ্বান করতে চাই কুষ্টিয়ায় লালন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হোক। সেখানে লালন চর্চা, মানবতার চর্চা হবে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) পাঠশালার আয়োজনে ‘চিরায়ত লালনের সন্ধানে’ শীর্ষক সেমিনার এ কথা বলেন বিশিষ্ট লালন গবেষক ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. খালেদউজ্জামান মিজান।

লালন সাঁইজির ১৩৪তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজী ভবনের ফোকলোর গ্যালারিতে বিকাল ৪টায় এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।  

তিনি বলেন, একজন ভালো দার্শনিক দরকার রাষ্ট্র পরিচালনায়। লালন বিশ্বের অন্যতম একজন দার্শনিক। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন লালনের দর্শন নিতে তার জন্মস্থান কুষ্টিয়ায় আসছেন। তাকে নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি সবসময় সমাজের নির্যাতিত মানুষের কথা বলেছেন। তাদেরকে জায়গা দিয়েছেন। মানুষকে ভালোবাসার মাধ্যমে ঈশ্বরকে পাওয়া যায় এটা তিনি বলেছেন। তিনি সুরে সুরে গানের তালে কথা বলেছেন। লোভ লালসা ত্যাগ করে মানুষকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন তিনি। বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকরা তাদের গান-কবিতায় যে দর্শনের কথা বলে গেছেন, ২৫০ বছর আগে লালনও সেই মানবতার কথা বলেছেন।

এসময় রাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক মোহাম্মদ সাকি বলেন, আমাদের মধ্যে বাউল গান, লালন নিয়ে এক প্রকার বিভক্তি আছে। হিন্দু মুসলিম ট্যাগ লাগিয়ে আমরা তাদের বিভক্ত করি। বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে নিজেদের সম্পদ বানিয়ে ফেলতে চায়। তাদেরকে আলাদা গোষ্ঠী করে সীমাবদ্ধ করে ফেলি। পশ্চিমরা যে বাইনারি সেট করে দিয়েছেন আমরা তাকেই দর্শন ভাবি। এজন্য লালনের মতো দার্শনিকরা হারিয়ে যায়। আপনি যদি বাংলাকে খুঁজতে যান আপনি লালনকে খুঁজে পাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক কবি সাহিত্যিকদের পূর্ব ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, লালনকে বুঝতে হলে আগের দিনে ফিরে যেতে হবে। লালন মানুষকে আত্মসত্ত্বা বিকাশের শিক্ষা দিয়েছেন। যাদের সমাজে কেউ ঠাঁই দিত না তাদের লালন আশ্রয় দিয়েছিলেন। গানের মাধ্যমে তাদের কথা তুলে ধরে আত্মশক্তিকে জাগ্রত করার শিক্ষা দিয়েছিলেন।

লালনকে নিয়ে পৃথিবীর সব দেশে আগ্রহের শেষ নেই। সবাই তাকে নিয়ে গবেষণা করতে চাই। বাউল হলে যে ইসলাম থেকে সরে যায় এমন নয়। তারা এদেশের মাটি ও মানুষের কথাই বলেছেন বাউল গানের মাধ্যমে। তাদেরকে ধারণ করার মাধ্যমে আমরা মানুষের মতো মানুষ হয়ে উঠতে পারবো।

ফাহমিদুর রহমান ফাহিম/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়