‘হৃদরোগ কমায় বিনার চিনাবাদাম’

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, চিনাবাদাম ফসলটি শরীরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বাজে কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। হৃদপিণ্ডের সুস্থতা ও হৃদরোগ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে এই ফসলটি।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় ময়মনসিংহের কৃষক ও কৃষাণীদের বিনা উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবনকালীন বিনা চিনাবাদামের জাতসমূহের পরিচিতি ও চাষাবাদ কৌশল নিয়ে আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ও কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আর্থিক সহযোগিতায় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় তিনি বলেন, চিনাবাদাম শুধু চাষাবাদের জন্যই নয়, বরং মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধিতেও দারুণ সাহায্য করে। একটি পতিত জমিতে যেখানে কোনো ফসল চাষ করা যায় না, সেখানে টানা তিন বছর চিনাবাদাম চাষ করলে পরবর্তীতে ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষ করা যাবে। এটি চাষাবাদ করাও বেশ লাভজনক।

তিনি আরও বলেন, বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদ করলে হেক্টর প্রতি ফলন আরও বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন। তবে এ ফসলের বীজ সাধারণ উপায়ে বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না। তাই আমি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগকে অনুরোধ করবো, যেন কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে বীজ সরবরাহ করা হয়।

বিনার গবেষণা শাখার পরিচালক ড. মো. ইকরাম উল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএই-ময়মনসিংহ অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সালমা আক্তার, ফলিত গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিভাগের প্রধান ও পিএসও ড. শামীমা বেগম। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের পিএসও ড. মো. মাহবুবুল আলম তরফদার।

কৃষিবিদ সালমা আক্তার কৃষকদের উদ্ভাবিত জাতসমূহের সুবিধাসমূহ এবং উচ্চ ফলনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া চিনাবাদামের উন্নত জাতসমূহ এবং আধুনিক চাষাবাদ কৌশল নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি চিনাবাদাম চাষে সঠিক মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা, বীজ বপনের সঠিক সময়, রোগ নিয়ন্ত্রণ, পরিচর্যা এবং সারের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, বিনা উদ্ভাবিত চিনাবাদামের সাতটি জাত রয়েছে। এর মধ্যে বিনা চিনাবাদাম-৪ ও ১০ উচ্চ ফলনশীল এবং স্বল্প জীবনকালের। বাকি জাতগুলো লবণাক্ততা সহিষ্ণু। বিনা চিনাবাদাম-৪ এর গড় ফলন হেক্টরে ২.৬ টন এবং বিনা চিনাবাদাম-১০ এর ফলন হেক্টরে ২.৮ টন।

বিনা চিনাবাদাম-৪ এর রবি মৌসুমে জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ১০০-১২০ দিন। আবার বিনা চিনাবাদাম-৬ এর রবি মৌসুমে জীবনকাল ১২৫-১৩০ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ১১০-১২০ দিন।