এনআইবি মহাপরিচালককে যোগদান করতে না দেওয়ায় রাবিতে মানববন্ধন
রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
ঢাকার আশুলিয়ায় অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক পদে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহেদুর রহমানকে যোগদান করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ২টায় প্যারিস রোডে রাবি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন। তারা অনতিবিলম্বে এনআইবির মহাপরিচালক হিসেবে ড. শাহেদুরের যোগদানের ব্যবস্থা নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘অধ্যাপক শাহেদুর রহমান বাংলাদেশের জীবপ্রযুক্তি প্রসারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি জীবপ্রযুক্তিবিদদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিএবিজির সভাপতির দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন। বাংলাদেশের জীবপ্রযুক্তি নীতিমালা প্রণয়ন কমিটিতে থাকার পাশাপাশি সরকারের একাধিক কমিটিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। এর বাইরেও তিনি বাংলাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োটেকনোলজি বিষয়ের সিলেবাস প্রণয়ন করেছেন।’
রাবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ‘গত ৩০ বছর এনআইবির মহাপরিচালক পদে যারা ছিলেন, তারা সবাই নন-বায়োটেকের ছিলেন, যা হাস্যকর। ২৪ এর স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম একজন বায়োটেকনোলজিস্টকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আমরা এটা দেখে খুবই আশান্বিত হয়েছিলাম। কিন্তু কিছু ব্যক্তি তাকে কাজে যোগদান করতে বাঁধা সৃষ্টি করছেন, এটা খুবই অপ্রীতিকর একটা বিষয়।’
একই বিভাগের অধ্যাপক অনিল চন্দ্র দেব বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন জারির ১২ দিন পরও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহেদুর রহমানকে তার চেয়ারে বসতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা চাই তিনি যেন অনতিবিলম্বে মহাপরিচালক হিসেবে তার পদে বসতে পারেন। দেশের বায়োটেকনোলজিস্টরা দেখিয়ে দিয়েছেন, তারা কি করতে পারেন। আমরা যদি কোভিডের কথা মনে করি, তাহলে দেখতে পাবো কোভিড নিয়ন্ত্রণে ৫০ শতাংশ অবদান বাংলাদেশের বায়োটেকনোলজিস্টদের। কোনো ডাক্তার পিসিআর মেশিন অপারেট করতে পারতেন না। কোনো ডাক্তার ভাইরাস নির্ণয় করতে পারতেন না। সেটা শিখিয়েছেন বায়োটেকনোলজিস্টরা।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড নিয়ন্ত্রণে আমাদের অবদান ছিল। কিন্তু আমাদের অবদানকে বিগত সরকার উপলব্ধি করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টা বুঝতে পেরেই একজন বায়োটেকনোলজিস্টকে এনআইবির মহাপরিচালক হিসেবে বসিয়েছেন। কিন্তু বিগত সরকারের দোসররা তাকে এগিয়ে যেতে দিচ্ছেন না। আমরা মনে করি বাংলাদেশ অসংখ্য বায়োটেকনোলজিস্ট আছেন, যারা এই জায়গাটির জন্য উপযুক্ত। সরকার একজনকে বেছে নিয়েছে, আমরা সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় তাকে স্বাগত জানাই। সরকার আমাদেরকে একটা সুযোগ দিয়েছে, আমরা বাংলাদেশকে কিছু দিয়ে যেতে চাই।’
এর আগে, গত ১৫ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব উজ্জল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহেদুর রহমানকে এনআইবির মহাপরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর গত ১৭ অক্টোবর মহাপরিচালকের দায়িত্ব নিতে গেলেও তিনি যোগদান করতে পারেননি।
অধ্যাপক শাহেদ ২০২৩ সালে ১৬ অক্টোবর জাবির সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। সেখানে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের প্যানেল থেকে ৩৯নং ব্যালটে নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক হিসাবেও দায়িত্বে ছিলেন। ফলে এনআইবির মহাপরিচালকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি নিয়োগ পাওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
/ফাহিম/মেহেদী/