ছাত্রলীগ নেতাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে রাবি ছাত্রদল নেতার মামলা
রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
মারধর, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের এক নেতা। সোমবার (৪ নভেম্বর) নগরীর মতিহার থানায় এ মামলা করেন তিনি।
মামলার বাদী শেখ নুর উদ্দীন আবির রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। তার বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার চর কাচিকাটা গ্রামে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে, ক্রমানুসারে মামলার বিবাদীরা হলেন- লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল নুর জাকারিয়া ওরফে ফাহাদ মৃধা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হামিদ হৃদয়, দর্শন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী টোকন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান বাকী, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. হাবিবুর রহমান এবং মনোবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোফাজ্জল হক নাসিম। এর মধ্যে সাকিবুল হাসান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও রাবি ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটির পদপ্রত্যাশী ছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ২৫ মে দুপুর ১২টার দিকে ফাহাদ মৃধা পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ সংক্রান্ত জটিলতার নিয়ে জরুরি আলোচনার জন্য বাদীকে মুঠোফোনে কল দেন। রাবির রবীন্দ্র ভবনের যেতে বলে পরে তিনি নিজেই বাদীকে মোটরসাইকেলযোগে নিয়ে আসতে যান। দুপুর পৌনে ১টার দিকে রবীন্দ্র ভবনের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছে মোটরসাইকেল থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে হাবিবুর রহমান ‘ছাত্রদলের সদস্য হয়ে তুই ক্যাম্পাসে কি করিস’ বলেই বাদীর শার্টের কলার ধরে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে।
এ সময় মোফাজ্জল হক নাসিম পাশ থেকে আনা একটি বস্তা থেকে হকিস্টিক, বাঁশ, লোহার রড, হাসুয়া, ও চাকু বের করে দেন। তখন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও রাবি ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী বাকীসহ অন্যান্যরা বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত করেন। পরে আসামীদের ধারালো অস্ত্র বের করতে দেখে বাদী আবির জীবন বাঁচাতে দৌড় দেন।
বিবাদীদের ধাওয়া খেয়ে তিনি রাবি সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে পৌঁছালে লোকপ্রশাসন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী তাকে উদ্ধার করে রিক্সায় উঠিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। পরে বাদীকে রিক্সায় তুলে দেওয়ায় বিবাদীরা লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাফি খানকে মারপিট করে জখম করেন এবং তার কাছে থাকা নগদ সাত হাজার টাকা নিয়ে নেন। পরবর্তীতে হলে থাকার জন্য ও পরীক্ষার পূর্ব মুহূর্তে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে রাফির কাছ থেকে বেশ কয়েক ধাপে সর্বমোট ৪৪ হাজার টাকা চাঁদা নেন।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে সাক্ষীদের সহায়তায় রামেক হাসপাতালের ৪নং ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন বাদী শেখ নূর উদ্দীন আবির। এরপর ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই বাদীর চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে ফাহাদ মৃধা তাকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে বাঁধা দেন এবং আবারও মারধরের হুমকি দেয়। এরপর তিনি প্রাণনাশের ভয়ে মাস্টার্সে ভর্তি না হয়েই রাজশাহী ত্যাগ করতে বাধ্য হন।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ছয়জনকে বিবাদী করে ছাত্রদলের একজন একটা মামলা করেছেন। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে আইনানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’\
/ফাহিম/মেহেদী/