ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২১ ১৪৩১

কুবির শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তনের দাবি শিক্ষার্থীদের

কুবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৭, ৫ নভেম্বর ২০২৪  
কুবির শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তনের দাবি শিক্ষার্থীদের

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল’ নামকরণ করতে প্রাধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করেছেন একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন শেখ হাসিনা হলের ১৬১ জন আবাসিক শিক্ষার্থী। 

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে হলের নাম পরিবর্তন পক্ষে হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর এ আবেদনপত্রটি জমা দেন তারা।

হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর দেওয়া আবেদন পত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, “গত জুলাইয়ের স্বৈরাচারী সরকারের নির্বিচারে হামলা, গুলিবর্ষণ ও হত্যার মত ন্যাক্কারজনক ঘটনার কারণে আমরা হলটির নাম পরিবর্তন করে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মতানুসারে ‘বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল’ করার আবেদন জানাচ্ছি। বর্তমান নামটি আমাদের ৫ আগস্টের মতাদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের স্বৈরাচার শাসকের নামের সঙ্গে সংযুক্ত করা হলে এর নিরপেক্ষতা ও বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতায় প্রভাব পড়তে পারে।”

তারা আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, একটি হলের নামকে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক বা শিক্ষাবান্ধব প্রতীকী দিকের ভিত্তিতে রাখা হলে, তা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে এবং তাদের মধ্যে ঐক্য ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে, শেখ হাসিনার মুর‍্যাল অপসারণের জন্যও আবেদন জানাচ্ছি, যাতে হলের পরিবেশ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকে। ইতোমধ্যে এলাকাবাসী এটি নিয়ে বারবার আমাদের জানিয়েছেন, এটি অপসারণ না করলে তারা হলে ঢুকে এর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন।’ এতে আবাসিক নারী শিক্ষার্থীরা এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন তারা।

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিমা আক্তার বলেন, “অসংখ্য ভাই-বোনের ত্যাগে আমাদের দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। স্বৈরাচারের নামে একটা হল হতে পারে না। তার কোনো চিহ্নও থাকা আমাদের জন্য অসহনীয়। তাই আমরা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি’ করার জন্য আবেদন দিয়েছি। কেননা সুনীতি ও শান্তি দুজন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে তাদের সম্মাননায় কিছু করা হয়নি। এজন্য এ হলটি তাদের নামে করে আমরা সম্মানিত করার চেষ্টা করেছি। আর স্বৈরাচাররের ছবির যে মুর‍্যাল সেটাও সরানোর জন্য দাবি জানিয়েছি আমরা। আশা করি প্রশাসন দ্রুতই ব্যবস্থা নিবে।”

শেখ হাসিনা হলের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারিয়া রিমি বলেন, ‘আমরা চাই না কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির নামে আমাদের হলের নাম হোক। প্রশাসনের নিকট দাবি জানাই, দ্রুত যেন এই নাম পরিবর্তন করে।’

এ বিষয়ে শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোসা. শাহিনুর বেগমকে ফোন করা হলে তিনি মুঠোফোনে এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং বিভাগের অফিস রুমে দেখা করতে বলেন। পরবর্তীতে তার অফিস কক্ষে গিয়ে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখান থেকে পুনরায় ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

গত ৪ আগস্ট শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল’ রাখেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

/এমদাদুল/মেহেদী/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়