ঢাকা     রোববার   ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ৩ ১৪৩১

ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা

রাবি সমন্বয়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৪১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৯:৪৫, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
রাবি সমন্বয়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

পোষ্য কোটা নিয়ে কথা বলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চারটি সংগঠন।

রোববার (১৭ নভেম্বর) এ দাবিতে উপাচার্য বরাবর রাবি অফিসার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র প্রদান করা হয়েছে। এর অনুলিপি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), প্রক্টর এবং ছাত্র উপদেষ্টাকেও দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র সালাহউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের সন্তানদের নিয়ে অশালীন, অশ্লীল ও কুৎসিত ভাষা প্রয়োগ করেন, যা অত্যন্ত লজ্জার, মানহানীকর ও অসম্মানের। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে অফিসার সমিতির উদ্যোগে রাবি সহায়ক কর্মচারী সমিতি, পরিবহন টেকনিক্যাল সমিতি, সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়নের সমন্বয়ে একটি জরুরি সভা হয়েছে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে শিষ্টাচার বহির্ভূত এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনগুলো।

এতে আরও বলা হয়, সভায় বক্তব্য দেওয়া ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নিতে প্রশাসনকে পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পত্র প্রদান শেষে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠনগুলো মতামতের ভিত্তিতে কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের রাবি সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত পোষ্য কোটা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ নির্ধারণ করে।

এরপর সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এ কোটা বাতিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার সময় দেন এবং তা-না হলে অনশন কর্মসূচিতেও বসবেন বলে ঘোষণা দেন। এছাড়া ফেসবুকে লাইভে এসে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলেন।

এছাড়া শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তিতে কোটা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার জন্য গত শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহা. মাঈন উদ্দীনকে সভাপতি করে ২০ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করেন উপাচার্য।

জানতে চাইলে রাবি অফিসার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, “সালাউদ্দিন আম্মার তার একটি ফেসবুক ভিডিওতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারি ও তাদের সন্তানদের হিজড়া বলেছেন, যা শিষ্টাচার বহির্ভূত। তিনি আমাদের আত্মসম্মানে আঘাত দিয়েছেন। এর প্রতিবাদে এবং  ই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি আবেদনপত্র দিয়েছি। তিনি এর সমাধান দিতে ব্যর্থ হলে আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”

তবে রাবি সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “আমার বক্তব্য খুবই স্পষ্ট। এ অযৌক্তিক কোটা এবারই বাতিল করতে হবে। আমার বক্তব্যটা ছিল প্রতীকী অর্থে এমন যে, যদি ওনাদের সন্তানেরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, মানসিক প্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন অথবা তৃতীয় লিঙ্গের হয়ে থাকে, তাহলে তাদের কোটা দিতে আমাদের সমস্যা থাকবে না।”

তিনি বলেন, “তারা এমন কথায় লজ্জিত হয়েও যদি এ পোষ্য কোটা থেকে বেরিয়ে আসেন, সেখানেই স্বার্থকতা। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ শতাংশ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারি কিন্তু এ কোটার সুবিধা নিচ্ছেন না। তাহলে সামান্য কিছু ব্যক্তির জন্য সবাই কেনো এ বদনাম বয়ে বেড়াবেন?”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়