দেড় বছর ধরে অচল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া
ইবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া। এমনকি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হলেও তালাবদ্ধ রয়েছে ক্যাফেটেরিয়ার দরজা। এতে খাবারের জন্য বাইরের হোটেলে ছুটতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাস ও এর পার্শ্ববর্তী হোটেলগুলোর তুলনায় কম মূল্যে ক্যাফটেরিয়ায় ভালো খাবার পাওয়া যায়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এটি বন্ধ থাকায় চড়া মূল্যে বাইরের হোটেল থেকে খাবার খেতে হচ্ছে। কেউ কেউ আবার হল ডাইনিংয়ের মানহীন খাবারও খাচ্ছেন। এতে নানা ধরনের অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে।
জানা গেছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ২০২৩ সালের ১২ মার্চ ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ করে দেন তৎকালিন ক্যাফেটেরিয়া ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম। একই বছরের ২৬ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাফেটেরিয়া চালু হলেও মাস পেরোনোর আগেই লোকসান দেখিয়ে তা আবার বন্ধ হয়ে যায়।
ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত তরুণদের সংগঠন কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশের (সিওয়াইবি) সভাপতি ত্বকী ওয়াসীফ বলেন, “ক্যাফেটেরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অন্যতম শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সেখানে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা হবে, খাবার টেবিলে আড্ডা, আলোচনা ও হাজারো স্মৃতি তৈরি হবে; এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু ইবির ক্যাফেটেরিয়া দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা গত ১০ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ক্যাফেটেরিয়া চালুসহ চারদফা দাবিতে প্রক্টর বরাবর স্মরকলিপি দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ক্যাম্পাসে নবীনদের আগমন হয়েছে। ক্যাফেটেরিয়া চালু থাকলে হয়ত তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুটা আরেকটু সুন্দর হতে পারতো। প্রশাসনের কাছে ক্যাফেটেরিয়া চালুর পাশাপাশি সেখানে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।”
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান বিশ্বাস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া দীর্ঘদিন এভাবে বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত অসুবিধার ও হতাশার। এটা শুধু শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদা পূরণে বাধা সৃষ্টি করছে না, বরং ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক কার্যক্রমকেও ব্যাহত করছে। অথচ এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতোই উদাসীন। শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসন যেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।”
গত ১৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির নতুন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন। নতুন দায়িত্ব পেয়ে টিএসসিসির অডিটোরিয়ামকে প্রোগ্রামের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলাসহ ক্যাফেটেরিয়া পুনরায় চালু করার আশ্বাস দেন। তবে তারা যোগদানের প্রায় তিনমাস পেরিয়ে গেলেও তাকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া দ্রুত চালু করার জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। তবে ক্যাফেটেরিয়া দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেখানকার বর্তমান অবস্থা নাজেহাল। অনেক সংস্কারের প্রয়োজন আছে। সংস্কার কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে খুব দ্রুতই চালু করা হবে।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী