ঢাকা     রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১০ ১৪৩১

পবিপ্রবিতে রাতভর র‍্যাগিংয়ে অসুস্থ ৩ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার ৭

পবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৫, ২৪ নভেম্বর ২০২৪  
পবিপ্রবিতে রাতভর র‍্যাগিংয়ে অসুস্থ ৩ শিক্ষার্থী, বহিষ্কার ৭

রাতভর র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে অসুস্থ পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) তিন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সাত শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত করে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে এ ঘটনা ঘটে। এম. কেরামত আলী হলে অবস্থানরত স্নাতক প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪) শিক্ষার্থীরা র‍্যাগিংয়ের শিকার হন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি এ ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন র‍্যাগিংয়ের ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বনের ঘোষণা দিয়েছিল। এরপরও শনিবার দিবাগত গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. কেরামত আলী হলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের র‌্যাগ দেওয়া হয়। র‍্যাগিং চলাকালে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ভুক্তভোগী তিনজন শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে এ অমানবিক নির্যাতনের কারণে তাদের অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারেননি।

ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আনুমানিক রাত ১২টায় ইমিডিয়েট সিনিয়ররা গণরুমে সবার ফোন জমা নিয়ে একটা টেবিলে রেখে দেন। তাদের কান ধরে উঠাবস করনো ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা ছাড়া বিভিন্ন নির্যাতন করেন। এছাড়া সিনিয়ররা সিগারেটে ধোঁয়ায় অস্বস্থিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেন গণরুমে। এক পর্যায়ে তাদের জানালায় ঝুলানো থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা শুরু করেন।

র‌্যাগিংয়ের খবর পেয়ে এম. কেরামত আলী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন ও সহকারী প্রক্টর মো. আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ সময় গণরুমে ঢুকেই র‍্যাগিংয়ের সঙ্গে যুক্ত দুজনকে কম্বলের নিচে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় আটক করেন। তদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ক্যান্টিনে গিয়ে র‍্যাগিংয়ের দায়ে অভিযুক্ত আরও চারজনকে আটক করেন।

এদিকে, র‌্যাগিংয়ের শিকার হয়ে অসুস্থ তিন শিক্ষার্থীকে রাতেই পবিপ্রবির হেলথ কেয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে তাদের পবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

র‌্যাগিংয়ে এ পর্যন্ত ২০২২-২৩ সেশনের সাতজন শিক্ষার্থী জড়িত বলে নিশ্চিত করেছেন পবিপ্রবি প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান। তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতি একেবারেই কাম্য নয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি এমন পরিস্থিতি যেন পরবর্তীতে আর না ঘটে, সেজন্য পবিপ্রবি প্রশাসন আরও অধিক তৎপর হবে।’ র‌্যাগিং বন্ধে সবার একান্ত সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রক্টর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম রোববার (২৪ নভেম্বর) শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিয়ে সুচিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় তিনি র‍্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

ঢাকা/আনিসুর/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়