খুবির শিক্ষা কার্যক্রমের ৩৪ বছর পূর্তি সোমবার
নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম
শিক্ষা কার্যক্রমের ৩৪ বছর পূর্ণ করে ৩৫ বছরে পদার্পণ করছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এ উপলক্ষে সোমবার (২৫ নভেম্বর) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আপামর মানুষের নিরলস প্রচেষ্টা ও ত্যাগ। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৮৯ সালের ৯ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
পরে ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে জাতীয় সংসদে ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-১৯৯০’ পাস হয়, যা গেজেট আকারে প্রকাশ হয় একই বছরের ৩১ জুলাই। এরপর ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে চারটি ডিসিপ্লিনে ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। ১৯৯১ সালের ৩০ আগস্ট প্রথম ওরিয়েন্টেশন ও ৩১ আগস্ট ক্লাস শুরুর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়।
একই বছরের ২৫ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শিক্ষা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রতিবছর এ দিনটি ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯টি ডিসিপ্লিনে ৮ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত নতুন প্রজন্মের স্বাধীনতার পর এবার ভিন্ন আলোকে উদযাপিত হবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের গতিশীল নেতৃত্বে ৫ আগস্ট পরবর্তী সংকটময় মুহূর্তেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে স্বমহিমায় এগিয়ে চলেছে, তার ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে প্রতিষ্ঠানটি নিঃসন্দেহে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের স্পিরিটের প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হবে বলে প্রত্যাশা সবার।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২৪ উপলক্ষে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। এক বাণীতে তিনি বলেন, “নতুন বাংলাদেশে নতুন আবহে গড়ে উঠবে প্রাণের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। এটি হবে একটি প্রভাবশালী বিশ্ববিদ্যালয়। এর গবেষণাগুলো দেশের উন্নয়নে ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমনভাবে দক্ষ হয়ে উঠবে, সব জায়গায় তারা একটি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে সক্ষম হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন এমনভাবে পরিচালিত হবে, যেন তা সমাজের এবং জাতির টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।”
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে রয়েছে- শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, মুক্তমঞ্চে বিভাগগুলোর গত বছরের অর্জন ও আগামী বছরের পরিকল্পনা উপস্থাপনা বোর্ড স্থাপন, কেক কাটা, আলোচনা সভা, মুক্তমঞ্চে গত বছরের কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থী ও সংগঠনসমূহকে সম্মাননা প্রদান, বাদ জোহর দোয়া মাহফিল ও সুবিধাজনক সময়ে মন্দিরে প্রার্থনা, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া প্রধান ফটক, রাস্তা, শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরি ভবন, অ্যাকাডেমিক ভবন ও হলসমূহ আলোকসজ্জা করার কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী