ঢাকা     বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩২

কুবিতে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার দাবি শিবির ও বৈষম্যবিরোধীদের

কুবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:১৯, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪  
কুবিতে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার দাবি শিবির ও বৈষম্যবিরোধীদের

উপাচার্যের কাছে শাখা শিবিরের নেতাকর্মীরা স্মারকলিপি প্রদান করছেন

গুচ্ছের সমন্বিত ভর্তি পদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। 

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ৩টায় দাবি আদায়ে উপাচার্যের বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা পৃথক দুইটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজস্ব ভর্তি প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে স্মারকলিপিতে বলেন, “গুচ্ছ একটি জটিল, অস্বচ্ছ এবং বৈষম্যমূলক পদ্ধতি। এ পদ্ধতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের স্বকীয়তা হারাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতকরণে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে। গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হচ্ছে।”

তারা আরও বলেন, “এ প্রক্রিয়ায় নিজস্ব প্রশ্ন কাঠামোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের যাচাইয়ের সুযোগ কমে যাচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈচিত্র্য কমছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত প্রতিটি ব্যাচে সিট ফাঁকা থাকছে। এর হার পূর্ববর্তী যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।”

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা পুনঃপ্রবর্তন ও আঞ্চলিক কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

তারা স্মারকলিপিতে গুচ্ছে থাকার নয়টি সমস্যার কথা তুলে ধরেন ৷ সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভর্তি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা, বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হচ্ছে, প্রশ্নপত্রের বৈচিত্র্যের অভাব, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানদণ্ড উপেক্ষা, একাধিক সুযোগ হারানোর ঝুঁকি, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে জটিলতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তা হারানো, মেধার সঠিক মূল্যায়নের অভাব ও সময়ের অপচয়।

এ বিষয়ে শাখা ইসলামি ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, “কুবি শাখা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। গুচ্ছের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমগুলো অবনতির দিকে যাচ্ছে তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মানও কমছে। এ দিকগুলো বিবেচনা করে আমাদের মনে হয়েছে, গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক নাঈমুর রহমান বলেন, “গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিভিন্ন অসুবিধা থাকার কারণে এ প্রক্রিয়া থেকে বের হতে উপাচার্যের কাছে আমরা স্মারকলিপি নিয়ে যাই। তবে স্যার জানিয়েছেন, তিনি এ পদ্ধতিতে না থাকার পক্ষে। এ বিষয়ে আগামীকাল ‍বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটা মিটিং আছে, সেখান তিনি এ বিষয়টি উল্লেখ করবেন বলে জানিয়েছেন।”

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে শুরুতে গুচ্ছতে না থাকার বিষয়ে মতামত জানিয়েছিলাম। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনার মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অন্তত এ বছর যেন গুচ্ছতেই থাকি। আমাদের আসলে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বে যাওয়ার সুযোগ নেই।”

তিনি বলেন, “এ বছর অন্তত গুচ্ছেই থাকছি। তারপরও আমাদের উপাচার্যদের একটা মিটিং রয়েছে। আমি সেখানে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর কথা জানাব। তারপর ফাইনালি সিদ্ধান্ত নিতে পারব।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়