জাবিতে হামলাকারীদের ব্যবস্থা নিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম
জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই আন্দোলনে হামলায় জড়িতদের আগামী সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
এ সময়ের মধ্যে তাদের চিহ্নিত করে মামলা দায়েরসহ বিচারের আওতায় নিয়ে না আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সম্পুর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ হুশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি নতুন কলা ভবন প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কিছুক্ষণ অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের সদস্য জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, “আমাদের জাবিহ পুরো দেশে যত হামলা হয়েছে তার সুষ্ঠু বিচার আমরা চাই। গত ৫ আগস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার দোসররা গা ঢাকা দিয়েছে, অনেকে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আমাদের উপর যারা হামলা করছে তাদের কারো ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
তিনি বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু আমাদের আশার প্রদীপ নিভে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমরা স্বৈরাচারীকে যেভাবে হটিয়েছি, প্রয়োজনে দ্বিগুণ শক্তি দিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আবার রুঁখে দাড়াবো।”
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি বলেন, “আমাদের উপর যারা হামলা করেছে, আহত করেছে, শহীদ করেছে- প্রশাসন যদি এ সন্ত্রাসীদের বিচার না করে দেশ চালাতে চায়, তাহলে কখনোই সুষ্ঠুভাবে দেশ চালাতে পারবে না। ক্যাম্পাসে ১৫ জুলাই এর হামলায় অনেক শিক্ষার্থী শহীদ হওয়ায় সম্ভাবনা ছিল। কি ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেদিন, আমরা সবাই দেখেছি। অথচ সেসব হামলাকারী সন্ত্রাসীরা আমাদের আশে পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
তিনি বলেন, “প্রশাসনের উচিত ছিল, দ্রুত সময়ে মধ্যে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া। প্রশাসনের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে, যাদের নামে মামলা হয়েছে, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা এবং হামলার সঙ্গে জড়িত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অতি দ্রুত রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা করে ব্যবস্থা নেওয়ার।”
গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ জিতু বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের চারমাস সাতদিন পর জুলাই বিপ্লবে হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের বিচার নিশ্চিতের দাবিতে এখানে দাঁড়িয়েছি। যেখানে জুলাই বিপ্লবে আহতরা হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে, শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, সেখানে আপনারা শিক্ষকরা বসে বসে রাজনীতির সমীকরণ মিলাচ্ছেন।”
তিনি আরো বলেন, “এ শহীদ মিনার থেকে কোটা আন্দোলন শুরু করেছি, গত ৫ আগস্ট শপথ নিয়ে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে লং মার্চের ঘোষণা দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েছি। এখান থেকে প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, যদি আগামী ৭ দিনের মধ্যে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা না হয়, আপনারা যদি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা না করেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সম্পুর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী