ঢাবির বিতর্কিত শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিলের দাবি সাদা দলের
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
গত দেড় দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মেধাকে উপেক্ষা করে দলীয় বিবেচনায় বিতর্কিত শিক্ষকদের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে জানানো হয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানো ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে সমর্থনকারী শিক্ষকদের ব্যবস্থা নেওয়া দাবিও জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, বিগত দেড় দশকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রশাসন মেধা ও যোগ্যতাকে উপেক্ষা করে দলীয় বিবেচনায় বহু শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। এসব নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হলেও প্রশাসন আমলে নেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তবুদ্ধি চর্চার পরিবেশকেও মারাত্মকভাবে বাধ্যগ্রস্ত করা হয়েছিল।
ভিন্নমতের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হয়রানি, নিপীড়ন, নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনার নজির রয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ ও লঘু অপরাধে সাদা দল সমর্থিত শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতির একাধিক ঘটনা কারও অজানা নয়। অপরদিকে, নীল দল সমর্থিত শিক্ষকদের গুরু অপরাধেও শাস্তি না দিয়ে পুরষ্কৃত করার দৃষ্টান্ত রয়েছে। এসবের প্রতিকার হওয়া প্রয়োজন।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দল সমর্থিত শিক্ষকগণ ও শিক্ষক সমিতি গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে গেছেন। পতনের দুদিন আগে ৩ আগস্ট তারা ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ করে খুনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জ্ঞাপন ও তার প্রতি সমর্থন জানান।
এর আগে, নীল দল সংবাদ সম্মেলন করে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করে প্রকারান্তরে খুনি হাসিনাকে গণহত্যায় উৎসাহিত করে। শুধু তাই নয়, ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ আওয়ামী সমর্থক কতিপয় শিক্ষক উপস্থিত থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন এবং তার গণহত্যাকে সমর্থন করেন। এসব কারণে সাদা দল ইতোমধ্যে শিক্ষক সমিতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এ সময় স্মারকলিপিতে তারা পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিগত আওয়ামী শাসনামলে দেড় দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিতর্কিত ও দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে সেগুলো বাতিল করতে হবে; গত জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থান দমনে গণহত্যা চালানো ক্ষমতাচ্যুত ও পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থনকারী শিক্ষকদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অন্য দাবিগুলো হলো- গত ৩ আগস্ট ২০২৪ তারিখে গণভবনে অনুষ্ঠিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং নীল দলের যেসব শিক্ষক নেতা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর গণহত্যাকে সমর্থন করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে কর্মরত ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে পরিচিতদের অবিলম্বে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে; দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে শিক্ষক সমিতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন পর্যায়ে কোন নির্বাচন করা যাবে না।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী