ঢাকা     শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ১২ ১৪৩১

রাবির সহকারী প্রক্টর হলেন আওয়ামী পন্থী শিক্ষক, শাস্তির দাবি

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১২, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪  
রাবির সহকারী প্রক্টর হলেন আওয়ামী পন্থী শিক্ষক, শাস্তির দাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো বহাল আছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নতুন করে সহকারী প্রক্টর পদে আওয়ামী লীগপন্থী এক শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ায় ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা।

এছাড়া আওয়ামীপন্থীদের বিচারের আওতায় আনতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যত্থায় প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারী দিয়েছেন রাবি সমন্বয়করা।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহীর অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, “সাতদিনের মধ্যে প্রশাসনের ফ্যাসিস্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা ,কর্মচারীদের বিচারের আওতায় না আনলে রাবি প্রশাসনিক ভবনে তালা দেবেন শিক্ষার্থীরা।”

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আবারো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “সাতদিন পরে ভুলে যাব আপনাদের সাথে আন্দোলন করেছি। শহীদের এক ফোটা রক্তের সাথে বেইমানি নয়। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদত্যাগ করবেন।”

আরেক পোস্ট তিনি বলেন, “What is this রাবি প্রশাসন? আওয়ামী শাসনামলে তাপসী রাবেয়া হলে আট বছর হাউস টিউটর ছিল তামজীদ হোসেন মোল্লা। তাকে নাকি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রক্টর হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সে আন্দোলনের বিরুদ্ধে মাঠে সোচ্চার ছিল। কিসের ভিত্তিতে তাকে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রক্টর নিয়োগ দিচ্ছেন? আপনাদের বিরুদ্ধে কি যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে? অবিলম্বে তার নিয়োগ বাতিল এবং এর কারণ দেখাবেন প্রশাসন। একের পর এক ফ্যাসিস্টদের পূনর্বাসন করছেন আপনারা।”

সমন্বয়ক মেহেদী সজীব তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, “বিগত স্বৈরাচার রেজিমের মদদপুষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের বিচার অনতিবিলম্বে নিশ্চিত করার জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাতদিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হলো।”

তিনি আরো লেখেন, “আপনাদের উপর আমাদের একবুক আশা ভরসা ছিল। কিন্তু বারবার আপনারা সেই আশাকে নিরাশায় রূপ দিচ্ছেন। ফ্যাসিস্টদের বিচারের জন্য আর কোন ছাড় হবে না। আর আপনাদের কালক্ষেপণ করতে দেওয়া হবে না। রুটিন দায়িত্ব পালন করার জন্য আপনাদেরকে ওই চেয়ারে বসানো হয়নি। জুলাইকে ধারণ করতে না পারলে জায়গা ছেড়ে দিন। আগামী সাতদিনের মধ্যে যদি দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা আমাদের চোখে না পড়ে, তাহলে আপনাদের পদত্যাগ দাবি করতে আমরা দুবার ভাববো না।”

সমন্বয়ক নওসাজ জামান তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, “এসব কি চলছে রাবি প্রশাসন? এগুলোতে কি আসলেই আপনাদের ইন্ধন আছে নাকি এদের ছাড়া অন্য কোনো সহযোদ্ধা খুঁজে পাচ্ছেন না. নাকি রাজনৈতিক ব্যক্তিগুলো ফোর্স করছে? যেখানে এদেরকে বিচারের মুখোমুখি করার কথা সেখানে আপনারা এদের রুমের মধ্যে জায়গা দিচ্ছেন কোন দৃষ্টিকোণ থেকে? অবিলম্বে তানজিদ হাসান মোল্লাকে বহিস্কার করতে হবে তার সাথে এমন দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।”

এ বিষয়ে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী প্রক্টর মো. তানজিদ হোসেন যোগদান করবেন না। আর যদি কথা আসে আওয়ামী লীগের দোসর ও আন্দোলন-বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে- সেগুলো নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। কয়েকটি কমিটি কাজ করছে। তবে প্রশাসনের একার পক্ষে সবাইকে খুঁজে বের করা সম্ভব নয়। যে কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে সেটা আমরা তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। শিক্ষার্থীদেরকে বলব আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন।”

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সহকারী প্রক্টর হিসাবে নিয়োগ পান মো. তানজিদ হাসান মোল্লা। তিনি গত ৩ আগস্ট জুলাই বিপ্লবের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়ে শিক্ষকদের করা আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ রাবির ৪৬৭ নাম্বার ভোটার।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়