দোষীদের আড়াল করতে জবি প্রশাসন ‘নাটক’ করছে: ইসলামী ছাত্র আন্দোলন
জবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের বাসে হামলায় জড়িদের বিচার থেকে আড়াল করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমঝোতার নাটক করছে বলে দাবি করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন। তারা বাসচালক ও তার সহকারীসহ নয় শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় দোষীদের বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে গণমাধ্যমকে পাঠানো ছাত্র সংগঠনটির জবি শাখার প্রচার সম্পাদক মো. শাহিন আলম স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। শাখার সভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ এবং সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান এ ঘটনাকে অমানবিক ও আগ্রাসী হামলা হিসেবে উল্লেখ করেন।
যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, প্রশাসন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পরিবর্তে দোষীদের আড়াল করতে সমঝোতার চেষ্টা করছে, যা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। আমরা প্রশাসনকে জানাতে চাই, নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমানে প্রশাসন ন্যাক্কারজনকভাবে দোষীদের আড়াল করতে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদে প্রশাসনের জন্য ক্ষতিকর হবে। আমরা দ্রুত তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তি এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে মহাখালীর বাস টার্মিনাল এলাকায় একতা পরিবহনের একটি বাস সড়ক বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকার প্রতিবাদ করায় জবির শিক্ষার্থীবাহী উল্কা-৪ বাসের হামলা চালায় অর্ধশতাধিক পরিবহন শ্রমিক। এ ঘটনায় বাসের চালক জগদিশ চন্দ্র দাস গুরত্বর আহত হন। তার চোখ ও হাত মারাত্মক জখম হয়। এছাড়াও বাসের সহকারিসহ ৯ শিক্ষার্থী আহত হন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক বার্তায় জানানো হয়, ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বিষয়টি সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পারস্পরিক আলোচনার পর বিশ্ববিদ্যালয় বাস মেরামত, আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন এবং হামলায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার সম্মতির ভিত্তিতে দু’পক্ষের সমঝোতায় বিষয়টি সুরাহা হয়।
জানা গেছে, দুই পক্ষের দীর্ঘ আলোচনার পর একতা পরিবহনকে দেড়লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা বাস মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন বলেন, “আমাদের একটি বাসের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসের ঝামেলা হয়। বিষয়টি আমি নিজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিসে উপস্থিত থেকে সমাধান করে আসছি। আশা করছি, ছাত্র ভাইয়েরা বিষয়টি আর বাড়াবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “চালকের চিকিৎসা বাবদ ১ লাখ টাকা, চালকের সহকারীর চিকিৎসা বাবদ ৩০ হাজার টাকা এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা ধরা হয়েছে। পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য অতিরিক্ত ব্যয় হলে সেটাও তারা বহন করবে। এছাড়াও বাস মেরামত বাবদ পরিবহন প্রশাসককে নগদ ১২ হাজার ৯০০ টাকা প্রদান করে।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী