ঢাকা     শুক্রবার   ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২০ ১৪৩১

ফেসবুক পোস্ট নিয়ে গবি প্রশাসনের নোটিশ, সমালোচনার ঝড়

গবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪  
ফেসবুক পোস্ট নিয়ে গবি প্রশাসনের নোটিশ, সমালোচনার ঝড়

সম্প্রতি ফেসবুক গ্রুপ ও পেইজে বিভিন্ন শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানহানিকর পোস্ট হওয়ায় এ বিষয়ে সতর্কতামূলক নোটিশ প্রদান করেছে গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু মুহাম্মদ মুকাম্মেল স্বাক্ষরিত সতর্কতামূলক নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এ নোটিশকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের সমালোচনার ঝড়।

নোটিশে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সম্পর্কে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, পেইজ, আইডিতে মানহানি ও আপত্তিকর পোস্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। এসব স্ট্যাটাস বা মন্তব্যের সঙ্গে কারো সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।

বিকেলে নোটিশটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন। কেউ কেউ কমেন্ট করে প্রশ্ন তুলছেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পর্কে ফেইসবুকে যদি সত্যতা লেখার কারণে ওই ব্যক্তি/গোষ্ঠীর মানহানি হয়, তবে সেখানে দোষটা কার? যে লিখেছে তার? নাকি যার সম্পর্কে সত্যতা তুলে ধরেছে তার? এটি সাইবার সিকিউরিটি আইন? নাকি নিজেদের বাঁচানোর জন্য ‘প্রাণ বাঁচাও বন্দোবস্ত আইন’?

জানা যায়, বিগত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি চক্র চারিত্রিক দোষারোপ করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে যাচ্ছে। যা দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং আলোচনার জন্ম দেয়। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের নিকট দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নোটিশের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক সমালোচনা করতেই পারে। বরং এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়ন হয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অধিকার সংবিধান কাউকে দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় এমন কাজ কেন করবে? এটা একটা স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত।

মেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড বায়োমেডিকেল ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউল হাসান শোভন বলেন, “ইদানিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্ৰুপে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে আপত্তিকর পোস্টের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা থাকবে। গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান হবে, এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু সমস্যা থাকবে, কিন্তু সমালোচনা থাকবে না, বিষয়টা দুঃখজনক। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীবান্ধব হতে হবে। যদি কোনো শিক্ষার্থীর সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ বক্স চালু হয়েছে। সেখানে যথোপযুক্ত অভিযোগ প্রদান অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অবহিত করা যেতে পারে।”

এ ব্যপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “গঠনমূলক সমালোচনা শিক্ষার্থীরা করতেই পারে। কিন্তু অপপ্রচার বা মানহানিকর সমালোচনা করা সমীচীন নয়। শিক্ষার্থীদের গঠনমূলক সমালোচনা করতে কোন বাঁধা নেই। কিন্তু কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা ঠিক নয়।”

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়