ঢাবির সিন্ডিকেট সভায় আওয়ামীপন্থিদের আমন্ত্রণ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন ঢাবি উপাচার্য ও প্রক্টর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় সিন্ডিকেট সভার আয়োজন করা হয়েছে।
সভায় আওয়ামী পন্থী তিন শিক্ষক আমন্ত্রণ পাওয়ায় সভার শুরুর আগেই উপাচার্যের অফিসের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন ঢাবির একদল শিক্ষার্থী।
ওই আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সাবেক নেতা অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও নীল দলের নেতা অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুঁইয়া এবং আওয়ামী লীগ নেতা এসএম বাহালুল মজনুন চুন্নু।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘আওয়ামীলীগের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ফ্যাসিবাদের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ডাকসুর রোডম্যাপ, দিতে হবে দিতে হবে’, ‘টু জিরো টু ফোর, ফ্যাসিবাদ নো মোর’, ‘নিজামের চামড়া, তুলে নেব আমরা’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘নিজামের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘চুন্নুর গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।
২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী নাঈম রাইজিংবিডিকে বলেন, “যারা ক্যাম্পাসকে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের আখড়া বানিয়েছিল, তারা এই রক্তের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে কীভাবে সিন্ডিকেটে রয়েছে? আমরা তার প্রতিবাদ জানাতে এসেছি।”
২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব ইমরোজ বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, আজকের সিন্ডিকেট সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি, ফ্যাসিবাদের দোসর, ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ইন্ধনদাতা নিজামুল হক ভূঁইয়া যোগদান করবেন। আমরা চাই না, যে ফ্যাসিবাদের কোনো দোসর ছাত্র হামলার মদদদাতা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় অংশ নিক।”
তিনি বলেন, “দ্বিতীয় স্বাধীনতা পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় ফ্যাসিবাদের কোন দোসরের অংশগ্রহণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চায় না। শিক্ষার্থীরা চায় না, ছাত্র হত্যার মদদদাতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ করুক।”
বিক্ষোভ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “তাদের (তিন আওয়ামীপন্থি সিন্ডিকেট সদস্য) তরফ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, তারা আসবেন না।”
আওয়ামী আমলের এই সিন্ডিকেট কেন ভেঙে দেওয়া হচ্ছে না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি ভেঙে দিলে আমরা মেনে নেব।”
এ সময় শিক্ষার্থীরা আজকের সিন্ডিকেট সভায় এক সপ্তাহের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোড ম্যাপ দেওয়ার দাবি করলে প্রক্টর জানান, সিন্ডিকেটে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে, একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে অবস্থান নেন ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী। তারা উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ খানের সঙ্গে কথা বলেন। মবের চাপে পড়ে এ সিন্ডিকেট যেন ডাকসু নির্বাচনসহ অন্য কোন ধরনের বৃহৎ সিদ্ধান্ত না নেয়, সে বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
অনির্বাচিত সিন্ডিকেটের মিটিং থেকে এ ধরনের কোন বৃহৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ছাত্রদল এটি মেনে নেবেন না বলেও জানান তারা।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী