ঢাকা     রোববার   ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২১ ১৪৩১

তালাবদ্ধ রাবির প্রশাসনিক ভবন ঘিরে উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫২, ২ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২২:১৬, ২ জানুয়ারি ২০২৫
তালাবদ্ধ রাবির প্রশাসনিক ভবন ঘিরে উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে রাখায় কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে প্রশাসন ভবনের মধ্যে আটকা রয়েছেন প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এদিকে, দাবি না মানায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগামী রবিবার (৫ জানুয়ারি) থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ ঘোষণা দিয়েছেন। অপরদিকে, পোষ্য কোটা পূর্বের ন্যায় ৫ শতাংশে পূনর্বহাল না করলে আগামী ৮ জানুয়ারি কর্মবিরতিতে যাওয়ার ডাক দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতি। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে এবং শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

জানা গেছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি সব ধরনের পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে সকাল ১০টা থেকে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকেই এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রশাসন ভবনে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশেষ প্রয়োজনেও কাউকে বের হতে বা প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

এ ছাড়া খাবারও খেতে পারেননি আটকে থাকা ব্যক্তিরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অনেকে। তবে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দিলেও কোটার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিকেলের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন। একইদিন সকাল সাড়ে ১১টায় অফিসার্স সমিতি নিজ কার্যালয়ে এক জরুরি সভায় আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন।

কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা দিয়ে সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “গতকাল (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানায়। আমরা গতকাল রাতেই এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছি। আমরা ঘোষণা দিয়েই প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়েছি। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোটা রাখার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।”

তিনি বলেন, “দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা প্রথা একটা হাস্যকর বিষয়। অবিলম্বে পোষ্য কোটা বাতিল করে মেধাবীদের মুক্তি দিতে হবে। আজকের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে পোষ্য কোটা বাতিল করা না হলে রবিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন করা হবে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলোও ক্যাম্পাসের বাহিরে যেতে দেওয়া হবে না।”

কর্মবিরতির বিষয়ে জানতে চাইলে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মোক্তার হোসেন বলেন, “আমরা আগামী ৫ জানুয়ারি উপাচার্য স্যারের সঙ্গে দেখা করবো। তিনি যদি আমাদের দাবি মেনে না নেন, তাহলে ৬ জানুয়ারি মানববন্ধন, ৭ জানুয়ারি আমরা অবস্থান কর্মসূচি এবং ৮ জানুয়ারি আমরা দিনব্যাপী কর্মবিরতি পালন করবো। তাতেও যদি কোন সমাধান না হলে আমরা লাগাতার কর্মসূচিতে যাব এবং কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দেব।”

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা কমপ্লিট শাটডাউন করতেই পারে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে আলাপ-আলোচনার বিকল্প নেই। বিষয়টি সমাধানে আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গেই কথা বলব। কারণ এ ধরনের কর্মসূচি পালিত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শিক্ষার্থীরা। আমরা চাই না, আমাদের কোনো শিক্ষার্থীর ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হোক।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়