শখের বাগানেই সফল কলেজ শিক্ষার্থী জারিফ
এস আলী দুর্জয়, রাজশাহী কলেজ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
২০১১ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শখে বসে গোলাপ গাছের চারা রোপণ করেছিলেন রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু জারিফ সিদ্দিক। শখ থেকে শুরু করলেও এখন আর সেখানে সীমাবদ্ধ নেই।
২০১৭ সালে অনার্স প্রথম বর্ষে থাকাকালে নার্সারি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। শুরু করেন বাণিজ্যিকভাবে গাছ বিক্রি। এ নার্সারির মাধ্যমে তিনি প্রতি মাসে প্রায় ৩০-৫০ হাজার টাকা আয় করছেন।
রাজশাহী নগরীর কোর্ট বুলনপুর মোড়ে তার বাসার ছাদে শখের বশে গড়ে তোলা বাগানটি এখনো শোভা পাচ্ছে। তবে তার ‘তিন ভাই নার্সারি’ নামে গড়ে তোলা নার্সারিটি কাশিয়াডাঙ্গায়।
সেখানে নতুন নতুন গাছ সংগ্রহ করে পরে তা থেকে চারা তৈরি করে বিক্রি করছেন। বর্তমানে তার নার্সারিতে ফল, ফুল ও শোভবর্ধনকারী গাছের বিভিন্ন জাত রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে সৌখিন মানষ তার নার্সারিতে এসে পছন্দের গাছ কিনে নিয়ে যান। অনেকে আবার তার ফেসবুক পেইজ ‘Bappa plant Haven’ এর মাধ্যমেও ঘর ও বারান্দা সাজানোর জন্য বিভিন্ন গাছের অর্ডার করেন। আর তিনি কুরিয়ারে পাঠিয়ে দেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
জারিফ সিদ্দিক বলেন, “ছোট থেকেই আমার গাছ-পালা ও পশু-পাখির সঙ্গে সম্পর্ক। আমার দাদাকে গাছ লাগাতে দেখতাম। আমার নানা কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। সেখান থেকেই শখের বাগান করি। পরবর্তীতে বাগানের ছবিগুলো ফেসবুকে পোষ্ট করলে অনেকে গাছ নিতে চাইতেন। তখন থেকেই স্বল্প পরিসরে ফুল গাছের চারা তৈরি করে বিক্রি করতাম।”
তিনি বলেন, “এক সময় দেখলাম, আমার গাছের চাহিদা ভালো। নতুন নতুন গাছ কেনার জন্য টাকার দরকার হতো। সেই টাকা দিয়ে নতুন নতুন ভ্যারাইটির গাছ সংগ্রহ করতাম। এডেনিয়াম ও বাগানবিলাসসহ বেশকিছু ফুল গাছও সংগ্রহ শুরু করি। এগুলোর চারা করা মোটামুটি সহজ ছিল। চারা বেশি তৈরি করে স্থানীয় মার্কেটে বিক্রি শুরু করি। পরে এসে অনলাইনে বিক্রি করা শুরু করি।
সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “অনলাইনে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল প্যাকেজিং। সেটাও ধীরে ধীরে আয়ত্ত করি। একসময় খেয়াল করলাম, শখটা শুধু আর শখ নেই। এটা আমার পেশা ও নেশায় পরিণত হয়েছে।”
জারিফ বলেন, “বর্তমানে ফুল-ফল মিলে আমার নার্সারিতে দুই শতাধিক প্রজাতির গাছ আছে। এডেনিয়ামের মধ্যে ১০০ এর বেশি কালার আছে। তার মধ্যে ৬-৭টা ভ্যারাইটির এডেনিয়াম আছে। বাগানবিলাসের গাছের মধ্যে অনেকগুলো ভ্যারাইটি আছে। বাগানবিলাসের ১৩০ এর বেশি ভ্যারাইটি সংগ্রহে আছে। এছাড়া দেশি বিদেশি বিভিন্ন ফল, ফুল , ইন্ডোর, ওষধি গাছ তো আছেই।”
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে এ উদ্যোক্তা বলেন, “নতুন নতুন ভ্যারাইটি ফুল ও ফল গাছ সংগ্রহ করে সেগুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলছি। এমন ভ্যারাইটি ফল সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে বলে আশা করছি। এছাড় নার্সারির পরিসর আরো বড় করে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পরিকল্পনাও রয়েছে।”
ঢাকা/মেহেদী