ঢাকা     সোমবার   ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৯ ১৪৩১

স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে একাট্টা কুবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

কুবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৫, ১২ জানুয়ারি ২০২৫  
স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে একাট্টা কুবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীদের গুচ্ছ থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবির সঙ্গে একাট্টা হয়েছেন শিক্ষকরা। পাশাপাশি গুচ্ছ নিয়ে আগামী ১৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে সময় নিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি।

রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষকরা এসে একাত্মতা প্রকাশ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম শিক্ষার্থীদের প্রক্টর অফিসে নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে সময় নেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমরা চাই না আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে থাকুক। আমরা চাই স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা হোক এবং শিক্ষার্থীদের যে ভোগান্তি তা লাঘব হোক। গুচ্ছের মতো দীর্ঘ ভর্তি প্রক্রিয়া আসলে ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত, এ গুচ্ছ প্রক্রিয়া চাই না।”

তিনি বলেন, “আগামী ১৪ তারিখ আমাদের সিন্ডিকেট মিটিং আছে। আমরা সেখানে এটি আলোচনা করবো। আশা করি ১৫ তারিখ দুপুর ১২টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিতে পারব।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদা বেগম, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান ও মুতাসিম বিল্লাহ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহমুদুল হাসান, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।

উপস্থিত শিক্ষকরা গুচ্ছ থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির প্রতি সমর্থন জানান এবং আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে তারা একমত পোষণ করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “ভর্তি পরীক্ষা স্বতন্ত্রভাবে হলে প্রত্যেকে তাদের এলাকার থেকে আসা শিক্ষার্থীদের কীভাবে আপ্যায়ন করবে সেই চিন্তায় থাকে, এসব দেখতেও অনেক সুন্দর লাগে। গুচ্ছের পূর্বে ভর্তি পরীক্ষার সময় পুরো ক্যাম্পাসে একটা উৎসব মুখর পরিবেশ থাকে।”

তিনি বলেন, “গুচ্ছের ফলে আমরা মেধাবী শিক্ষার্থী কম পাচ্ছি। আমার বিভাগে ৬০টি সিট কিন্তু শিক্ষার্থী এর থেকে অনেক কম ভর্তি হয়। আবার মাস্টার্সে গিয়েও কমে যায়। সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমি গুচ্ছ পদ্ধতি বাতিল চাই।”

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “আমি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে বের হতে চাচ্ছি। আমি এর আগেও গুচ্ছ পদ্ধতির পক্ষে ছিলাম না। তবে সরকার থেকে যেহেতু আমাকে থাকতে বলা হচ্ছে, তাই চেষ্টা করছি তাদের বুঝিয়ে এ পদ্ধতি থেকে বের হতে।”

২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা থেকে থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে গত ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী গণমাধ্যমে জানান, গুচ্ছ পদ্ধতিতেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিবে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। 

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবির গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার দাবিতে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয়। এছাড়া গত ৫ জানুয়ারি সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি এবং পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করা হয়। গত ৯ জানুয়ারি গুচ্ছ নিয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত জানাতে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়