নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে বশেমুরবিপ্রবি
বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) প্রশাসন।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর।
এর আগে, গত ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও গত বছর ২ অক্টোবর এবং ১৪ নভেম্বর শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকদের নিয়ে সাধারণ সভায় শিক্ষকদের সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গুচ্ছে থেকে বের হওয়ার কারণ হিসেবে জানা গেছে, সম্প্রতি বশেমুরবিপ্রবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তিতে গুচ্ছের কারিগরি ত্রুটির জন্য আসনের অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর নাম চলে আসা জটিলতা তৈরি হয়। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় থাকতে অনীহা তৈরি হয়েছে।
গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে প্রায় শতভাগ শিক্ষক গুচ্ছ পদ্ধতি বশেমুরবিপ্রবির ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপযোগী নয় বলে মতামত দেন। ৯৭.৩ শতাংশ শিক্ষক পূর্বের নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার পক্ষে মতামত দেন। এছাড়া ৩ শতাংশ শিক্ষক ব্যাপক পরিবর্তন সাপেক্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করা যেতে পারে বলে মতামত দেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় বর্তমান শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ওই জরিপের ফলাফল শিক্ষামন্ত্রীর হাতে সভা চলাকালে হস্তান্তর করা হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসার দাবির পেছনে ছয়টি কারণ উল্লেখ করেছেন। তাদের মধ্যে ৮১ শতাংশ গুচ্ছ ভর্তিতে সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতা এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও আনুষঙ্গিক ভোগান্তিকে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে না চাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
৬৩ শতাংশ একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে অসুবিধা, ৫৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা, ৫৩ শতাংশ সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব এবং ৫১ শতাংশ আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, “আজ আমাদের একটি মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমরা আগামী ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিজস্ব পদ্ধতিতে নেব।”
নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি ও কোটার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা দ্রুত নোটিশের মাধ্যমে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাব। আর ভর্তি কমিটি গঠন করার পর কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। গঠিত ভর্তি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী